মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
বাবার মৃত্যুর পর মুসা খান সোনারগাঁয়ের মসনদের অধিকারী হন। সে সময় সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে (১৬০৫-২৭) বারো ভূঁইয়াদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ছিলেন তার বাবা ঈসা খান। আর বাবার মতো তিনিও আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন। এরই স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি আজও অমর হয়ে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে।
কথিত আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর কার্জন হল প্রাঙ্গণে অবস্থিত মুসা খান মসজিদের উত্তর- পূর্ব কোণে তার সমাধি রয়েছে।
শোনা যায়, এই মসজিদটি তিনি নিজেই নির্মাণ করেছেন। ভৌগলিক স্থানাঙ্কে মুসা খান মসজিদের অবস্থান ২৩.৭২৬৬৪৭৪° উত্তর ৯০.৪০০৮০৫২° পূর্বে।
ইতিহাস
১৫৯৯ সালে পিতার মৃত্যুর পরে, মুসা খান বারো-ভূঁইয়াদের প্রধান হিসেবে বাংলার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। তার বাবার উত্তরাধিকার অব্যাহত রাখেন। তিনি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মুঘল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করেছিলেন এবং ১৬ জুলাই ১৬১০ সম্রাট জাহাঙ্গীরের সেনাপতি ইসলাম খান কর্তৃক পরাজিত হন।
সুবাহদার ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ এর রাজত্বকালে (রাজত্ব: ১৬১৭-১৬২৪) তিনি মুঘলদের আনুগত্য স্বীকার করেন। পরে তিনি ত্রিপুরা বিজয় এবং কামরূপে বিদ্রোহের দমনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন।
মৃত্যু
মুসা খান ১৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
নির্মাণ কৌশল
দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদে রয়েছে তিনটি গম্বুজ। মসজিদটি নির্মাণ করা হয় তিন মিটার উঁচু একটি ভল্ট প্লাটফর্মের ওপর। ভল্ট প্লাটফর্মটি ১৭ মিটার দীর্ঘ ও ১৪ মিটার চওড়া। প্লাটফর্মের উপর নির্মিত মসজিদটির নিচতলায় কয়েকটি কক্ষ রয়েছে। এগুলোতে আগে মসজিদ সংশ্লিষ্টরা বাস করলেও এর সবগুলোই এখন পরিত্যক্ত।
তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির একটি গম্বুজে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ঐ ফাটল দিয়ে গত বর্ষায় বৃষ্টির পানি মসজিদের ভিতরে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মুসল্লিরা। মসজিদের পশ্চিম ও পূর্ব প্রাচীর প্রায় ৬ ফুট পুরু। উত্তর ও দক্ষিণ প্রাচীর ৪ ফুট পুরু। চার দেয়াল, ছাদ এবং গম্বুজ— সবকিছুতেই দীর্ঘদিন ধরে শেওলা জমে কালচে হয়ে গেছে। মসজিদের দুই মূল স্তম্ভে বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।
Design and Developed By Sarjan Faraby