বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা প্রবাসী ও তাদের স্বজনদের মসজিদে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সেই সঙ্গে ওয়াজসহ সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সংক্রামক এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কুয়েতে মসজিদে সব ধরনের জামাত নিষিদ্ধ এবং ইরান ও ইরাকে শুক্রবারের জামাত বন্ধ করার পর এই আহ্বান জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ও দিকনির্দেশনা প্রদান সংক্রান্ত জরুরি সভা শেষে একথা বলেন তিনি। এই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ১৮টি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে করোনাভাইরাস মোকাবেলা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলেছি, আমাদের দেশে এই মুহূর্তে যাতে ওয়াজ মাহফিল বা অন্যান্য ধর্মের যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয় এগুলি থেকে যাতে বিরত থাকে। তাতে হয়ত সংক্রমনটা আরও কমবে এবং কমার সম্ভাবনা থাকবে। এই বিষয়গুলোর প্রচার-প্রচারণা মসজিদের মাধ্যমে… আমরা যদিও বলছি যে, সীমিত আকারে মসজিদে আসার জন্য।
বিদেশফেরতদের মসজিদে না আসার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা ইতোমধ্যে জানেন যে, ওমরাহ ভিসা বন্ধ হয়ে গেছে। মক্কায় কোয়াব সংখ্যাও খুবই সীমিত হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এখানে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা কম আসলে ভালো হয় এবং যারা বিদেশ থেকে এসেছে তারা যেন না আসে মসজিদে এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনরা যাতে না আসে। এই বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিয়েছি।
আপাতত সর্দি, কাশি ও জ্বর থাকলে গণপরিবহনে ভ্রমণ না করারও অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কারও যদি শরীরে জ্বর থাকে তারা যেন কোনো যানবাহন ব্যবহার না করেন। সর্দি- জ্বর-কাশি সেরে যাওয়ার পর তারা ভ্রমণ করবে এবং যানবাহন ব্যবহার করবে।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রত্যাশা জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, চীন থেকে এই ভাইরাসের উপদ্রব শুরু হলেও এখন পুরো ইউরোপ এ ভাইরাসে জর্জরিত। আমেরিকায়ও শুরু হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশও আমরা নতুন কেইস পেয়েছি। কাজেই এখন বলতে পারি না যে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নাই। আছে এবং ছড়িয়ে যাতে না যায় সেদিকে আমরা বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছি।
প্রথমে যে তিনজনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছিল তারা সবাই সুস্থ হয়ে চলে গেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুইজন রোগী আছে।
শিল্প ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও সভায় ছিলেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদেরকে বলেছি যে, ওখানে যে শ্রমিকরা কাজ করেন তাদের তারা কীভাবে ম্যানেজ করতে পারেন।
তাদের কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার আগে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যায় কি না এবং কারও আত্মীয়-স্বজদের মধ্যে কেউ বিদেশ থেকে এলে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে যেন অবহিত করে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে।
বাস, রেল ও লঞ্চে যারা চলাচল করেন তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সেখানে যাতে সতর্কতা নেয়া হয়, যাত্রীরা যাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে এবং যাত্রীরা চলে যাওয়ার পরে বাসা, রেল ও লঞ্চ যাতে পরিষ্কার করে। এসব বিষয় রেল ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে বলা হয়েছে যে, যাদের আত্মীয়-স্বজন বিদেশে রয়েছে তারা যাতে খুব জরুরি না হলে এই মুহূর্তে দেশে না আসেন। কারণ তারাইতো করোনাভাইরাস দেশে নিয়ে আসল। এই ভাইরাস আরও বেশি যাতে ছড়িয়ে না যায় সেজন্য আমরা তাদেরকে বলেছি, মোবাইলের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে এই খবরটি দেয়ার জন্য।
বস্তিবাসীদের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে সমাজকল্যাণ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সব ধরনের প্রতিকারমূলক ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Design and Developed By Sarjan Faraby