মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
চীনের উহান প্রদেশ থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের আট হাজার মানুষ মারা গেছে। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। চীন থেকে ছড়ালেও শক্ত অবস্থান এবং সেখানে অবস্থানরত নাগরিকদের সচেতনতার কারণে ইতোমধ্যেই স্বাভাবিক হতে চলেছে চীনের পরিস্থিতি। গত কয়েকদিনে মৃতের সংখ্যা যেমন কমেছে তেমনি কমেছে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও।
চীনের এই সুস্থ হয়ে ওঠা কোন প্রতিষেধকে নয়- বরং আটটি পরামর্শ মেনে চলায় তারা সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের লিয়াওংনিং প্রদেশের ডালিয়ান শহরে অবস্থান করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হাশিম রাব্বি। রাব্বির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, করোনার কোন প্রতিষেধক নেই। একমাত্র সতর্কতা অবলম্বন করলেই এই রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।
চীনা সরকার করোনা মোকাবেলায় আপনাদের কী কী করণীয় মেনে চলতে বলেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে হাশিম বলেন, করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। চীনা সরকার করোনা মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। তাই তারা আজ সফল। আমাদেরকে আটটি পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। এগুলো আমাদের মেনে চলা আবশ্যকীয় ছিল। সেগুলো হল-
১. জ্বর, কাঁশি, সর্দি হলে তাৎক্ষণিক আপনাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
২. খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাইরে যেতে মানা করেছে। সপ্তাহে একদিন বাজার করতে বলেছে।
৩. এলাকা ভিত্তিতে লকডাউন করা হয়। যাতে করে করোনায় আক্রান্ত মানুষ এক এলাকা থেকে অন্য কোথাও ঢুকতে না পারে।
৪. বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৫. বাইরে থেকে এসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে বলা হয়েছিল।
৬. অযথা চোখে মুখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল।
৭. মানসিক ভাবে শক্ত থাকতে বলা হয়েছিল।
৮. নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া এবং ব্যায়াম করতে বলা হয়েছে।
হাশিম বলেন, বিশ্বের অত্যাধুনিক দেশগুলোর মধ্যে চীন অন্যতম। সেখানে এত সতর্কতা অবলম্বন করার পরেও এত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। অথচ বাংলাদেশে করোনা নিয়ে এখনো জরুরি অবস্থাই ঘোষণা করা হয়নি। এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাবে, বিনা চিকিৎসার জন্য মৃতের পরিমাণ বাড়বে এছাড়া মানুষ হতাশার মাঝে পরে গেলে সামাজিক অবস্থা ধংসের মুখে পরবে।
হাশিম আরো বলেন, দীর্ঘ ২ মাস চীনে আছি এবং থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে অফিস গুলো বন্ধ করুন। এর ভয়াবহ পরিণতির বিষয় সম্পর্কে বিবেচনা করুণ। নিজে সচেতন হোন। নিজে না পারলে পরিবারের মানুষের কথা ভেবে হলেও বাইরে অযথা ঘোরাঘুরি থেকে দূরে থাকুন। কারণ সব থেকে ভালো উপায় হবে ভাইরাস সংক্রমণ থামানো।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কথা জানায় জাতীয় রোগ তত্ত্ব ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৭ জন। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় আইইডিসিআর।
Design and Developed By Sarjan Faraby