শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ১২:৪২ অপরাহ্ন
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, আমেরিকার ক্যামেরন পার্ক নামের শহরটির সবাই প্লেনের মালিক। এ শহরে অলিগলি কিংবা ছোট-বড় রাস্তা বলে কিছুই নেই। মাত্র একটাই পথ, এর পুরোটাই রানওয়ে। শহরকে দুই ভাগে ভাগ করে সেই রানওয়ে এসে মিশেছে যে রাস্তায় সেই রাস্তাটিও ১০০ ফুট প্রশস্ত। প্লেন অনায়াসে ওঠানামা করতে পারে সেখানেও। শুধু তাই নয় ব্যস্ত রাস্তায় চলন্ত গাড়িকে পাশ কাটিয়ে এগিয়েও যেতে পারে কোনো প্রকার বাধা ছাড়া।
আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার এই ক্যামেরন পার্ক শহরে যারা থাকেন, তারা অফিস যান প্লেনে চড়ে। এমনকি সপ্তাহিক ছুটি কাটাতেও যান প্লেন নিয়ে। আমেরিকার সরকারি নথিতে অবশ্য ক্যামেরন পার্ক শহর নয়। আসলে একটি ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি। কিন্তু এটি শহর নামে পরিচিত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার বহু বিমানবন্দর অচল হয়ে পড়েছিল। একইসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকের সংখ্যাও বাড়ছিল। সংখ্যাটি ১৯৩৯ সালে ৩৪ হাজার থেকে বেড়ে ১৯৪৬ সালে চার লাখে গিয়ে পৌঁছায়। যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের আরামের অবসর দিতেই ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আমেরিকার বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন অচল বিমানবন্দরগুলোই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। চেনা পরিচিত পরিবেশে থাকতে বিমানচালকদের ভালো লাগবে, এই ধারণা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
১৯৬৩ সালে সেই ভাবনা থেকেই তৈরি ক্যামেরন পার্ক। এক সময়ে নাম ছিল ক্যামেরন পার্ক এয়ারপোর্ট। সেই নাম বদলে হয় ক্যামেরন পার্ক এয়ারপার্ক। শহরের প্রতিটি পরিবারেরই কোনো না কোনো সদস্য এক সময়ে বিমানচালক ছিলেন। বিশ্বে এমন ফ্লাই-ইন-কমিউনিটি রয়েছে ৬৪০টি। তার মধ্যে ৬১০টিই আমেরিকায়। তবে বৈশিষ্ট্যে ক্যামেরন পার্ক তার মধ্যে সবচেয়ে নিখুঁত বলে মনে করা হয়।
আর পাঁচটা শহরে বাস-ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ি যেভাবে চলে, এ শহরে প্লেনও চলে সেইভাবে। গাড়ির গ্যারাজের মতোই প্লেন রাখার জায়গা বা হ্যাঙ্গার রয়েছে ঘরে ঘরে। রাস্তার পাশের সাইনবোর্ডগুলো অনেকটাই নিচু। প্লেনের ডানা লেগে নষ্ট না হয়ে যায়, তার জন্যই অতিরিক্ত সাবধানতা। এমনকি রাস্তার নামও ‘বোয়িং রোড’।
Design and Developed By Sarjan Faraby