
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে টিসিবি ট্রাক নিয়ে নিজের খেয়ালখুশি মতো পণ্য বিক্রি করছে ডিলাররা। তদারকির দায়িত্বে থাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড সচিবদের সাথে কোনোরকম সমন্বয় করা হয়না বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার কোথাও কোথাও নিজস্ব লোকদের ডেকে জড়ো করে তারপর টিসিবি পণ্য বিক্রি করছেন ডিলার ও সচিব। কোথাও আবার হাতেগোনা ফ্যামিলি কার্ড হওয়ায় বাড়তি পণ্য বাইরের দোকানে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। সবমিলিয়ে কার্ড বা পরিচয়পত্র ছাড়া টিসিবি পণ্য বিক্রি পুরোটাই সরকারের মারাত্মক অর্থনৈতিক ঝুঁকি বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা। প্রতিদিন কোনরকম ফ্যামিলি কার্ড ছাড়াই প্রতি ট্রাকে ২০০ করে মানুষ টিসিবি পণ্য কিনছেন। বেশিরভাগ স্থানে একই বা একাধিক মানুষ একাধিকবার টিসিবি পণ্য কিনছেন। যাদের বেশিরভাগ লোক হয় মুদি দোকানদার নয়তো অবস্থাপন্ন গৃহস্থ। হতদরিদ্র বা নি¤œবিত্ত পরিবারের সদস্যরা খুব একটা লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কেনার সুযোগই পাচ্ছে না। টিসিবি ট্রাক আসার সংবাদ কীভাবে যেন আগেই পৌঁছে যায় একশ্রেণীর বোরখা পরিহিত নারীদের কাছে। যাদের কাছে আগে থেকেই বস্তা বা ব্যাগ প্রস্তুত পণ্য নেওয়ার জন্য। নগরীর ২১ নং ওয়ার্ড ঘুরে কয়েকজন কার্ড ধারী ক্রেতা বললেন, এখানে গোরস্থান রোডে ডিলার যে পণ্য দিয়েছেন তার অর্ধেক বেঁচে গেছে। কারণ, ১৫০ জন কার্ডধারীদের থেকে ১০০ জনই বাতিল হয়েছে।
এই বাড়তি পণ্য এলাকায় যাদের কার্ড নেই তাদের দিলেই পারে, তা না দিয়ে ডিলাররা নিজেরা বাইরে বিক্রি করে দিয়েছে। ২১ নং ওয়ার্ড সিটি করপোরেশনের সচিব হাবিব জানান, তার ওয়ার্ডের ফ্যামিলি কার্ড আছে এমন সবাই টিসিবি পণ্য বুঝে পেয়েছেন। তবে চারজন ডিলার আছেন, তাদের কেউ কেউ সমন্বয়হীন ভাবে কাজ করছেন।
১৩ নং ওয়ার্ডেও চারজন ডিলার রয়েছে বলে জানালেন সচিব আরাফাত। এখানেও একই সমস্যা। তবে টিসিবি পণ্য বোঝাই ট্রাক মাঝেমধ্যেই এই ওয়ার্ডের অলিগলিতে পণ্য বিক্রি করছে বলে জানান তিনি।
বেশিরভাগ ডিলারই আগের সেই সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এর মনোনীত দাবী করে একাধিক এলাকাবাসী বলেন, কার্ড বাতিল হওয়ার পরও এই ডিলাররা নিজ উদ্যোগে ঐসব লোকদের খুঁজে বের করেন। যাদের একই পরিবারে একাধিক ফ্যামিলি কার্ড ছিল এবং বাতিল হয়ে গেছে। ,তাদের ফোন করে ডেকে আনে, তাদের পণ্য দেওয়ার জন্য এই ডিলাররাই লাইনে একাধিক লোক দাঁড় করিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে অভিযোগ স্বীকার করে টিসিবি কর্মকর্তা শতদল ম-ল বলেন, এখনতো ২০০ জন পাচ্ছে, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে এই সংখ্যা ৪০০ হবে। তখন হয়তো এই না পাওয়ার অভিযোগ থাকবে না বলে মনে করেন টিসিবি কর্মকর্তা।
কিন্তু তার এমন ধারণা যৌক্তিক নয়, দাবী করে বরিশাল সাহিত্য সংসদ এর সহসভাপতি কবি শাহিন ভূইয়া বলেন, যেখানে ২০০ জনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়না, একই ব্যক্তি একাধিকবার পণ্য কিনছে, একজন চারপাঁচজন লাইনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে, সেখানে চার শতজন নিয়ে আরো বিপাকে পরবে প্রশাসন। ফ্যামিলি কার্ড বা রেশন কার্ড সব নাগরিকের জন্য হওয়া জরুরী। সেটাই দ্রুত বাস্তবায়ন এবং প্রতিটি পরিবারকে রেশনিং পদ্ধতির আওতায় আনার আহ্বান জানান বরিশালের বেশিরভাগ মানুষ।


