ঢাকামঙ্গলবার , ২৮ অক্টোবর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নেছারাবাদের ৩টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু এখন ‘মৃত্যুফাঁদ’

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
অক্টোবর ২৮, ২০২৫ ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে সাগরকান্দা স্কুলের পরের নাথপাড়ার প্রথম সেতুটি। তবে এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের কোনো মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় যুগ আগে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত এই তিনটি সেতু সাগরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের তিন গ্রামের মানুষের প্রধান যোগাযোগমাধ্যম। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সেতুগুলো নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। কয়েক বছর আগে বন্যায় গাছ পড়ে নাথপাড়া প্রথম সেতুটি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এম কে সবুর তালুকদার সেতুটি মেরামতের কথা বলে এর লোহার ভিম, অ্যাঙ্গেল ও স্লিপারগুলো খুলে নিয়ে যান। কিন্তু এরপর আর মেরামতের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। একই কারণে বাকি দুটি সেতুও সংস্কারের অভাবে বেওয়ারিশ অবস্থায় পড়ে আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মজিবুর রহমান মৃধা বলেন, ‘এই রাস্তার সবচেয়ে ভয়াবহ পুল নাথপাড়ার প্রথমটি। পুলের অবস্থা এত খারাপ যে বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না, অসুস্থ মানুষ হাসপাতালে নিতে পারি না। চেয়ারম্যানরা মেরামতের নামে লোহার ভিম খুলে নিয়ে গেছে, তারপর আর কেউ খোঁজ নেয়নি। একই অবস্থায় বাকি দুটি পুল রয়েছে।’

আরেক বাসিন্দা মো. জিয়া উদ্দিন তৌহিদ বলেন, ‘এই রাস্তাটি তিনটি গ্রামের মানুষের একমাত্র যোগাযোগ পথ। এখানে তিনটি মন্দির ও একটি স্কুল আছে। পুল না থাকায় আমরা প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করি।’

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সাগরকান্দা বাজার থেকে এক কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক এবং এ তিনটি সেতু নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছিল। কাজটি মেসার্স ইফতি ইটিসিএল নামের প্রতিষ্ঠানের নামে টেন্ডার হয়, যার মালিক সাবেক সংসদ সদস্যের ভাই মিরাজুল ইসলাম। কিন্তু দুর্নীতির মামলায় ঠিকাদারের লাইসেন্স জটিলতা দেখা দিলে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন ব্যাপারী বলেন, ‘টেন্ডার হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু মামলার কারণে কাজ হয়নি। পুলের লোহার ভিম ও অ্যাঙ্গেল কারা খুলে নিয়ে গেছে, তা আমার জানা নেই।’

সাবেক চেয়ারম্যান এম কে সবুর তালুকদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী বিকাশ চন্দ বলেন, ‘কোটি টাকার ওপরে টেন্ডার হয়েছিল। পরে ঠিকাদারি লাইসেন্সের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পুনরায় বিবেচনা করা হবে।’

স্থানীয়দের জোর দাবি, দ্রুত সেতুগুলো পুনর্নির্মাণ না হলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং তিনটি গ্রামের যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।