ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইসরা-মেরাজ কী ও কেন

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪ ৫:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

ধর্ম ডেস্ক :: ইসরা-মেরাজ কী ও কেন

ইসরা ও মেরাজ বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও মুজিজা। এক রাতে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাকে প্রথম মসজিদুল আকসায় নিয়ে যাওয়া হয়, মসজিদুল আকসা থেকে উর্ধ্বজগত ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়।

মক্কা থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত নবীজি (সা.) এর রাতের এ ভ্রমণ ইসরা নামে এবং মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে ঊর্ধ্বজগতে ভ্রমণ মেরাজ নামে পরিচিত।

নবুয়ত লাভের ১১তম বছর (৬২১ খ্রিস্টাব্দ) রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জন্য দুঃখ ও শোকের বছর ছিল। এ সময় তিনি তার কঠিন সময়ের ২ জন প্রিয় ব্যক্তি স্ত্রী খাদিজা (রা.) এবং চাচা আবু তালেবকে হারিয়েছেন। তা ছাড়া ইসলামের দাওয়াত নিয়ে তায়েফ গেলে সেখান থেকেও আশাহত হয়ে ফেরেন।

এ রকম সময় এক রাতে জিবরাইল (আ.) তাকে বোরাকে চড়িয়ে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। তখনকার সাধারণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় মসজিদুল আকসায় যেতে কয়েক দিন লেগে যেতো। কোরআনে সূরা ইসরায় এ ঘটনার বর্ণনা এসেছে।

পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে:

سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَىٰ بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا ۚ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ

উচ্চারণ: ‘সুবহা-নাল্লাযীআসরা-বিআ‘বদিহী লাইলাম মিনাল মাসজিদিল হারা-মি ইলাল মাসজিদিল আকসাল্লাযী বা-রাকনা- হাওলাহূলিনুরিয়াহূমিন আ-য়া-তিনা- ইন্নাহূ হুওয়াসসামী‘উল বাসীর’।

অর্থ: ‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার ৪ দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল’। (সূরা: বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
এ আয়াত থেকে বোঝা যায় ইসরা ছিল মহান আল্লাহর এক অলৌকিক নিদর্শন ও ক্ষমতার প্রকাশ। তিনি রাতের বেলা তার বান্দাকে মক্কা থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে গিয়েছিলেন তার বিভিন্ন নিদর্শন দেখাতে। এ আয়াত থেকে আরো বোঝা যায় মসজিদুল আকসা সংলগ্ন অঞ্চল বরকতময়।

আল্লাহর প্রিয় হাবিব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মেরাজ বা উর্ধ্বাকাশে ভ্রমণের প্রসঙ্গ এসেছে কোরআনুল কারিমের সূরা নাজমে। আল্লাহ বলেন: عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَاْوٰی، اِذْ یَغْشَی السِّدْرَةَ مَا یَغْشٰی،مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَ مَا طَغٰی، لَقَدْ رَاٰی مِنْ اٰیٰتِ رَبِّهِ الْكُبْرٰی.

অর্থ: ‘বস্তুত সে তাকে (হজরত জিবরাঈল আ.-কে) আরো একবার দেখেছে। সিদরাতুল মুনতাহা (সীমান্তবতীর্ কুলগাছ)-এর কাছে। তারই কাছে অবস্থিত জান্নাতুল মা’ওয়া। তখন সেই কুল গাছটিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল সেই জিনিস, যা তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। (রাসূলের) চোখ বিভ্রান্ত হয়নি এবং সীমালংঘনও করেনি। (অর্থাৎ দেখার ব্যাপারে চোখ ধোঁকায় পড়েনি এবং আল্লাহ তাআলা তার জন্য যে সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন, তিনি তা লংঘনও করেননি যে, তার সামনে কী আছে তা দেখতে যাবে।) বাস্তবিকপক্ষে, সে তার প্রতিপালকের বড়-বড় নিদর্শনের মধ্য হতে বহু কিছু দেখেছে। (সূরা: নাজম, আয়াত: ১৩-১৮)উল্লেখ্য, ইসরা ও মিরাজের ব্যাপারে কোরআনের বর্ণনায় সংক্ষেপে এতটুকুই বলা হয়েছে। আর বিস্তারিত এসেছে হাদিসের পাঠগুলোতে।

উক্ত আয়াতগুলো থেকে বোঝা যায়, মেরাজের রাতে নবীজি (সা.) ষষ্ঠ বা সপ্তম আকাশের অবস্থিত সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি জিবরাইলকে (আ.) তার আসল আকৃতিতে দেখেছিলেন। এ ছাড়া আল্লাহর আরো কিছু বড় নিদর্শন দেখেছিলেন যা আল্লাহ তাআলা তাকে দেখাতে চেয়েছিলেন। আল্লাহ যা দেখাতে চাননি তা তিনি দেখেননি বা দেখতেও চাননি। তার দৃষ্টি এদিক-সেদিক যায়নি এবং সীমাও অতিক্রম করেনি।