নিউজ ডেস্ক :: নতুন দাবিতে ঈদের পরে মাঠে নামবে বিএনপি
নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করতে অনেক ইফতার মাহফিলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যোগ দিচ্ছেন। এ ছাড়া ঈদ সামনে রেখে এবারও বিভিন্ন সময়ে গুম-খুন ও পঙ্গুত্বের শিকার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মীর পরিবারে দলের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বিএনপি।
এদিকে নির্বাচনের পর দলীয়ভাবে কিছু কর্মসূচি পালিত হলেও যুগপৎভাবে কোনো কর্মসূচি হয়নি। তবে মিত্রদের সঙ্গে বিএনপির নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। এই সময়ে বিএনপি সংসদ বাতিল, একদফা দাবি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে দলীয়ভাবে কালো পতাকা মিছিল, লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের মতো কর্মসূচি পালন করেছে। যুগপতের মিত্ররাও তাদের মতো করে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করে।
জানা গেছে, বিএনপি এখন ঈদের পর সরকারবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি ও কৌশল নিয়ে ভাবছে। সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে একদফা আলোচনা হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা গেছে, আন্দোলনের ধরন নিয়ে ঈদের পর যুগপতের মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে বিএনপি। সেখানে নতুন কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে। নির্বাচনের পরে গণতন্ত্র মঞ্চসহ শরিকদের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক হলেও কর্মসূচির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেখানে মূলত বিগত আন্দোলনের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-বিশ্লেষণ হয়। গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতের স্বার্থে বিএনপিকে বিগত আন্দোলন সফল না হওয়ার একটি সঠিক ও যথাযথ মূল্যায়ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
মঞ্চের নেতারা মনে করেন, পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়নের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারিত না হলে আগামীর আন্দোলনে সফলতা নিয়েও সংশয় থেকে যাবে। এ ছাড়া সরকারি চাপ ও প্রলোভন উপেক্ষা করে রাজপথে একদফার আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় বিএনপির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে শরিকদের ধন্যবাদ জানানো হয়।
এদিকে কারামুক্তির পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বিগত আন্দোলনের সফলতা-ব্যর্থতার একটি পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়নের পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে।
এদিকে রাজপথের কর্মসূচিতে সরকারের পতন না হওয়ায় নির্বাচনের পরপরই আন্দোলনের সাফল্য-ব্যর্থতার মূল্যায়ন শুরু করে বিএনপির হাইকমান্ড। সীমিত পরিসরের ওই মূল্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংগঠনগুলো রাজপথে কার্যকর ও প্রত্যাশিত ভূমিকা না রাখায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে চূড়ান্ত সাফল্য আসেনি বলে মনে করে দল। এমন মূল্যায়নের ভিত্তিতে অঙ্গসংগঠনের কমিটি ভেঙে দেওয়াসহ বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে গত ১ মার্চ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে গঠন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আংশিক কমিটিও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামীর আন্দোলন সামনে রেখে সংগঠন পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল নিয়েও ভাবছে বিএনপি। দীর্ঘ প্রায় আট বছরেও কাউন্সিল হয়নি দেশের অন্যতম বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলটির। এমন প্রেক্ষাপটে কাউন্সিল করা উচিত বলে মত আসছে বিএনপিতে। এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির মিটিংয়ে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে। সর্বশেষ গত ৪ মার্চ স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা হয়। তখন হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, আরও আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সারা দেশের নেতাকর্মীরা কারামুক্ত এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসায় চলতি বছরের শেষ দিকে বিএনপি তাদের সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল করতে পারে। দলটির নেতারা বলছেন, কাউন্সিল করতে হলে জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো নতুন করে করতে হবে। অঙ্গসংগঠনগুলোও পুনর্গঠন করতে হবে। ঈদের পর পর্যায়ক্রমে এসব কাজ শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।