নিজস্ব প্রতিবেদক :: কুয়াকাটায় পর্যটক সেজে মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে লাপাত্তা
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে ১৫ দিনের ব্যবধানে চারটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ মোটরসাইকেলের মালিক থানায় অভিযোগ না দেওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। এতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় প্রতিদিনই ভ্রমণে আসছে দেশ-বিদেশের হাজারও পর্যটক। একই স্থানে দাড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তসহ বঙ্গোপসাগরের সৌন্দর্য দেখতে আসেন পর্যটকরা। পর্যটকদের টাকার বিনিময়ে বাইকে ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকরা।চাহিদা ভালো থাকায় স্থানীয় যুবকদের কাছে জনপ্রিয় ব্যবসা হলো ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ব্যবসা।
স্থানীয় মোটরসাইকেল চালক মো. বশির বলেন, সম্প্রতি সময় সমুদ্র সৈকতে পর্যটক সেজে ঘণ্টাব্যাপী চুক্তিতে তার মোটরসাইকেল ভাড়া নেয় চক্রের সক্রিয় সদস্য। চোখের আড়ালে ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পথ পরিবর্তন করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে চোর। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় কলপাড়া টোল প্লাজা থেকে মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় মোটরসাইকেল চালক আবদুল জলিল বলেন, চোর চক্রের সক্রিয় সদস্যরা ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিয়ে মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু মোটরসাইকেলের কাগজ না থাকার কারণে মালিক পক্ষ মামলা এরিয়ে যান। এতে মোটরসাইকেল চোরকে জেল হাজতে প্রেরণ না করে পুলিশ ছেড়ে দেয়। সাজা না হওয়ার কারণে বের হয়ে আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠে চোর চক্রের সদস্যরা। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় মোটরসাইকেল চালকদের মাঝে।
আরেক মোটরসাইকেল চালক মো. রুবেল বলেন, সৈকত পাড়ে ভাড়ায় চালিত অধিকাংশ মোটরসাইকেলের গাড়ির কাগজ না থাকায় গাড়ি চুরি হলেও থানায় কোনো ধরনের অভিযোগ দিতে পারে না মালিকপক্ষ। এতে একদিকে নিজের আয়ের পথ বন্ধসহ কর্মসংস্থান হারাচ্ছে যুবকরা। অন্যদিকে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একই চোর বারবার মোটরসাইকেল চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছে। তাই এখন সচেতন হওয়ার ওপর জোর দিয়ে মোটরসাইকেলে আধুনিক ডিভাইস যুক্ত করছেন তারা।
আর কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি সোলাইমান বিশ্বাস বরিশালটাইমসকে বলেন, চোরের বিচার না হওয়ার কারণে একই চোর একাধিকবার মোটরসাইকেল চুরি করছে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা ধরে পুলিশে সোপর্দ করলেও মোটরসাইকেল মালিক বা চালক মামলা না দেওয়ায় চোরকে ছেড়ে দিচ্ছে প্রশাসন। কী কারণে গাড়ি চালক বা মালিক পক্ষ মামলা দিচ্ছে না সেই কারণ চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। কেউ মামলা না করলেও প্রশাসন বাদী হয়ে যাতে মামলা করে চোরকে উপযুক্ত সাজা দেওয়া হয় তার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফেরদৌস আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, সৈকত থেকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে। এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। জড়িত এক চোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মোটরসাইকেল তার সচেতন হতে হবে। পর্যটকদের কাছে মোটরসাইকেল ভাড়া দেওয়া ঠিক না। এ বিষয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা চলছে। চালক ও মালিকদের সচেতন করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।