নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনে নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতার অবসান হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর দু’পক্ষের মাঝে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে সকল সমস্যা এখন নিরসনের পথে। বালিকা বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সাবেক শিক্ষার্থীরা ২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে। কমিটির আহবায়ক মনোনীত হন প্রফেসর শাহ সাজেদা। এ কমিটির ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় বিদ্যালয়টির ২৬৩৮ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেন। এই কমিটির কার্যক্রম চলাকালে কতিপয় সাবেক শিক্ষার্থীরা সাবেক এমপি সুলতানা নাদীরাকে আহবায়ক করে আরেকটি কমিটি গঠন করে। এর পর সৃষ্টি হয় একের পর এক জটিলতা। কতিপয় শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং কতিপয় শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে অনুষ্ঠান স্থাগিতের জন্য। এছাড়াও প্রথম পক্ষকে অনুষ্ঠান স্থগিত করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষে দেয়া হয় আইনী নোটিশ। এরই মধ্যে প্রথম কমিটির সদস্য সচিব তানিয়া আরজুমান ববি পদত্যাগ করে। এসব জটিলতার কারণে ১ম পক্ষের লোকজন জেলা প্রশাসক এর সাথে দেখা করলে তিনি অনুষ্ঠান না করার পরামর্শ প্রদান করেন। ফলে প্রথম কমিটি নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের বিন্ধনের জন্য আদায়কৃত রেজিস্ট্রেশন ফি ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এই সিদ্ধান্তের পরে বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী সাবেক এমপি বিলাকিস জাহান শিরিন শতবর্ষ উদযাপনের জন্য এগিয়ে আসেন। তিনি সকলকে নিয়ে শতবর্ষ পালনের জন্য একটি নতুন কমিটির মাধ্যমে উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে ২৪ ডিসেম্বর দু’পক্ষের মাঝে একটি সমঝোতা চুক্তির অধীনে শতবর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সমঝোতা চুক্তিতে প্রথম পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রফেসর শাহ সাজেদা, রওনক পারভীন খুকু, সাহিদা জাহান, নাসরিন জাহান পিউরী। ২য় পক্ষে স্বাক্ষর করেন রাজিয়া আজিজ পূর্ণি, ফারজানা ইয়াসমিন মিতা, সমঝোতা চুক্তিতে জুড়ে দেয়া হয়। চুক্তিতে উল্লেখযোগ্য শর্ত হল: ০১। সোনালী ব্যাংক পিএলসি, বরিশাল কর্পোরেট শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবের নাম বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালমনাই এসোসিয়েশন (ইধৎরংযধষ এ.এ.ঐ.ঝ অষরসহর অংংড়পরধঃরড়হ) ও হিসাব নম্বর ০৩০৪৬০১০৩১৩৪২ গচ্ছিত নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের জমাকৃত অর্থ নতুন কমিটির পরিচালনা করবে। ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত চেক বই যার নম্বর ২৪৩৮২০১-২৪৩৮২১০ এবং ২৪৩৮১৯১-২৪৩৮২০০ প্রথম পক্ষ নতুন কমিটির কাছে বুঝিয়ে দেন। নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বমোট ২৬৩৮ জন। প্রকাশনার জন্য তাদের রেজিস্ট্রেশন ফরম এর প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যে প্রেসে সম্পন্ন হয়েছে। এই চুক্তির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয় শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রচারিত ফেইজবুক পেজে দ্বিতীয় পক্ষ (নতুন কমিটি) প্রকাশ করার ব্যবস্থা করবেন। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে প্রথম পক্ষের সর্বপ্রকার দায় দায়িত্ব, দেনা-পাওনা অবলুপ্ত বলে গণ্য হবে এবং রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলাকালিন সময় থেকে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া পর্যন্ত সকল কাজে ব্যয়িত খরচ যুক্তিসংগত বলে গণ্য হবে। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরে নিবন্ধণকৃত শিক্ষার্থীরা নতুন কমিটির সাথে সকল বিষয়ে যোগাযোগ করবেন। প্রথম পক্ষ বিগত ১ বছরে অনুষ্ঠান করতে না পেরে নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেয়ার ঘোষনা করার কোন শিক্ষার্থী টাকা ফেরত চাইলে দ্বিতীয় পক্ষ (নতুন কমিটি) তার টাকা ফেরত দিবেন।
দ্রুত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান আয়োজন করা সকল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আশা আকাঙ্খা। নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের সদস্য করে একটি অ্যালমেনিয়াম এ্যাসোসিয়েশন করতে হবে। প্রথম পক্ষের অর্থ বিষয়ক আহবায়ক ব্যাংকের হিসাব পরিচালনার স্বার্থে একজন স্বাক্ষরকারী হিসাবে বহল থাকবে। ফয়জুন নাহার শেলীকে আহবায়ক করে গঠিত নতুন কমিটির কাছে অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করার জন্য হস্তান্তর করা হইল।