নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীর বেশিরভাগ স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম থাকলেও উপছে পড়া ভিড় কোচিংগুলোতে। এসব কোচিং নিয়ন্ত্রণ করেন নামিদামি স্কুল কলেজের শিক্ষকরা। দায়সারাভাবে স্কুলের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে স্কুল চলাকালীন সময়েও চলে তাদের কোচিং বাণিজ্য।
সরকারি বেসরকারি সব স্কুল কলেজের একই অবস্থা। নাম মাত্র প্রতিষ্ঠানে সময় দিয়ে কোচিং বাণিজ্য নিয়েই থাকেন তারা। যে কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও স্কুলের চেয়ে বেশি কোচিং-এ গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা বলেন, স্কুলে তো পড়ালেখা নেই বললেই চলে। সেজন্য অনেকটা বাধ্য হয়ে একাধিক কোচিং করাতে হয়। নাহলে পরীক্ষায় ইচ্ছে করে নম্বর কম দেয় শিক্ষকরা।
বাধ্য হয়ে কোচিং করাতে প্রতি মাসে গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কোচিং এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরজমিনে দেখা যায়, নগরীতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দুই শতাধিক কোচিং এ ব্যাচভিত্তিক ক্লাস করায় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা।
স্কুল চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের দেখা যায় কোচিংগুলোতে। বিভিন্ন নামে বেনামে স্কুল কলেজের শিক্ষকরা তাদের নিজস্ব লোকজন দিয়ে চালায় কোচিংগুলো। ছোট ছোট রুম ভাড়া নিয়ে অনেকটা গাদাগাদি করে কোচিং করানো হয়। বরিশাল সরকারি জিলা স্কুল, সদর গার্লস স্কুল, কাউনিয়া আরজুমনি স্কুল, রুপাতলি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্কুল, সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উদয়ন স্কুল, কালেক্টরেট স্কুল, হালিমা খাতুন শিক্ষকদের প্রধান টার্গেট যেন কোচিং বাণিজ্য।
মাঝেমধ্যে বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হলেও বন্ধ হয় না ওই সব কোচিং। অদৃশ্য ক্ষমতাবলে চলে তাদের কোচিং সেন্টারগুলো। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের আস্তে আস্তে স্কুল কলেজর ওপর নৈতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর বরিশাল জেলার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের সময় শিক্ষক পেশা ছিল সম্মানিত পেশা। সেই পেশাকে এখন ব্যবসায়িক রূপ দিয়েছে শিক্ষকরা। তাই এখন আর সম্মানিত পেশা নেই। তাদের কাছে শিক্ষার চেয়ে টাকার মূল্য বেশি হওয়ায় স্কুলের চেয়ে কোচিং বাণিজ্যে মনোযোগ বেশি তাদের।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) উপমা ফারিসা বলেন, সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের কোচিং করানো সম্পূর্ণ নিষেধ। কেউ যদি এ ধরনের কাজে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।