নিজস্ব প্রতিবেদক :: সন্ত্রাসীদের জনপদ বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন। বাড়ি-ঘর, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, চাঁদাবাজি, জমির ধান লুট, জোর করে চাষাবাদ, সরকারি জমি জোর করে দখল নেওয়া এখন নিত্যদিনের কর্মকান্ড। পুলিশের ভূমিকা নীরব। মানুষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না বাড়ি-ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ভয়ে। এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও পুলিশ এদের ধরছে না। তাই এরা এখন বে-পোরোয়া হয়ে উঠেছে। এদের হাতে ইউনিয়নটির প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এখন জিম্মি হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
শ্রীপুর লঞ্চঘাট থেকে দক্ষিণের পথ ধরে যাওয়ার সময় পথে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের সাথে আলাপ করলে তিনি তার নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, আমি সব জানি। গত ৩-৪ মাস ধরে এই শ্রীপুরে যা ঘটছে তা আমার জন্মের পরে কখনো দেখিনি। তিনি সহ এলাকার আরো ৪ জন বৃদ্ধ বলেন, এলাকার রাজ্জাক শেখ, মন্নান শেখ, গাফফার শেখের ২০-২৫ জনের একটি বাহিনী রয়েছে। এরাই সব অপকর্মের হোতা। এই বাহিনীর কাছে রয়েছে ধারালো অস্ত্র-সস্ত্র। এরা কোন রাজনৈতিক দল করে না। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তাদের দলের কর্মী পরিচয় দিয়ে চলে। বৃদ্ধরা আরো অভিযোগ করে বলেন, শ্রীপুর লঞ্চঘাট এলাকায় নান্টু নন্দীর দোকানে এই বাহিনী হামলা চালিয়ে ১০ ব্যারেল জ্বালানী তেল, ২৫টি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যায়। এর আগে ওই দোকানীর কাছে হামালাকারীরা বড় অংকের চাঁদা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে এই লুটপাট চালায়।
বাহের চরের ব্যবসায়ী মাছুম হাওলাদার এর ৩০ বস্তা চাল, ২০টি গ্যাস সিলিন্ডার, ২ ব্যারেল তেল সহ তার ২টি দোকান থেকে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায়। জামাল নামের একজন ব্যবসায়ীর ২ ব্যারেল জ্বালানী তেল নিয়ে যায়। আমির নামের এক ব্যাক্তির বাড়ী-ঘরে হামলা চালিয়ে ফ্রিজ, কাচের আসবাবপত্র, খাট, লেপ-তোশক, লুট করে নিয়ে যায়।
জামাল নামের এক ব্যবসায়ির দোকান থেকে ২ ব্যারেল জ্বালানী তেল লুট করে নেয়া হয়। এদিকে টিপু মোল্লার জমির ধান চাষার বাড়ী থেকে লুট করে নেয়। জাহিদ নামক এক ব্যক্তির জমি সন্ত্রাসীরা তার অনুপস্থিতে জোর করে চাষ করে।
অপরদিকে গত ২৪শে জানুয়ারি দিদারুল ইসলাম মোল্লা নামে শ্রীপুরের এক বাসিন্দা ভোলায় মারা যায়। তার মরদেহ শ্রীপুরে নিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা স্পিডবোটে হামলা চালায়। মরহুম দিদারুল এর ভাই জাহিদকে মারধর করে। শ্রীপুর মৌজায় ৭০ একর সরকারি খাস জমি সন্ত্রাসীরা দখলে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ (হারুন মোল্লা) বলেন, আমি অসুস্থ তাই দির্ঘদিন এলাকায় নেই।