নিজস্ব প্রতিবেদক :: ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ‘অবমাননার’ নিন্দা জানিয়েছে বরিশালের মুক্তিযোদ্ধারা। শিবিরের দলীয় প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’-এর ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হয়েছে উল্লেখ করে এ জন্য ছাত্রশিবিরের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী প্রচার প্রপাগন্ডার জন্য সংগঠনটির কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারী) বরিশাল জেলার ৪৮ মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাকিস্তান আমলের ইসলামী ছাত্রসংঘ তথা বর্তমানে ইসলামী ছাত্রশিবির নামক সংগঠনটি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতার পাশাপাশি নিজেরা সশস্ত্র আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন দেশব্যাপী নারকীয় হত্যা, লুট, নারী ধর্ষণ করেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও তারা তাদের স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চায়নি। এমনকি তারা ১৯৭১ সনে তাদের মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য অনুতপ্তও নয়।
ইসলামী ছাত্রশিবির কর্তৃক প্রকাশিত ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কর্তৃক সম্পাদিত মাসিক মুখপত্র ‘ছাত্র সংবাদ’ এর ডিসেম্বর সংখ্যায় জনৈক আহমেদ আফঘানি কর্তৃক রচিত ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ শিরোনামের প্রবন্ধে আমাদের গৌরব ১৯৭১ সনের মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য করে ছাত্র শিবিরের আদর্শের বর্ণনা দিয়েছেন। আহমেদ আফঘানির প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে “অনেক মুসলিম না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। এটা তাদের ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতা ছিল। আল্লাহ তায়লা তাদের ক্ষমা করুন।”
তাদের এধরনের কার্যক্রমের দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছাত্রশিবির এখনও মুক্তিযুদ্ধকে ও স্বাধীন বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখ করেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে তারা প্রত্যেকেই বুঝে শুনে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। আর যারা শান্তি কমিটি, আলবদর, আলশামস, রাজাকার বাহিনী গঠন করে হত্যা, লুন্ঠন, অগ্নি সংযোগ, নারী ধর্ষণ করেছেন তারাও পাকিস্তানকে রক্ষা ও মুক্তিযুদ্ধকে বিরোধীতা করার জন্য বুঝে শুনে মানবতা বিরোধী কার্যকলাপে অংশ নিয়েছে এবং এখনও তারা সেই দর্শনে বিশ্বাসী।
বরিশাল জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রশিবিরের এরূপ ধৃষ্টতাপূর্ণ প্রবন্ধের তীব্র নিন্দা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী প্রচার প্রপাগন্ডার জন্য সংগঠনটির কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।