নিজস্ব প্রতিবেদক :: পিরোজপুরে সিভিল সার্জনসহ ৯ জনের বি*রুদ্ধে দুদকের মা*মলা
পিরোজপুরের জেলা হাসপাতালে পৌনে দুই কোটি টাকার ওষুধ ও এমএসআর (চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সামগ্রী) সামগ্রীর দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালের ৪ জন চিকিৎসক, স্টোর কিপার এবং ওষুধ সরবরাহকারীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিরোজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শরীফ শেখ মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান, হাসপাতালের সিনিয়র কন্সালটেন্ট (গাইনি) ও সার্ভে কমিটির সভাপতি ডা. ফরাহানা রহমান, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. নিজাম উদ্দিন, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. সুরঞ্জিত কুমার সাহা, হাসপাতালের স্টোরকিপার মো. আলামীন গাজী এবং ওষুধ সরবরাহকারী এস এম সামসুল আরেফীন (নাজিরপুর), মো. হানিফুল ইসলাম (ঢাকা), মো. জহিরুল ইসলাম (মাগুরা, যশোর) ও মো. রাশেদুজ্জামান এরশাদ (মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ)।
দুদকের পিরোজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দণ্ডবিধির ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ওষুধ ও এমএসআর সরবরাহকারী ৪টি প্রতিষ্ঠান পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের অনুকূলে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ঔষধ ও এমএসআর (চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সামগ্রী) সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। এ সরবরাহের কার্যাদেশপ্রাপ্ত ৪টি প্রতিষ্ঠান ও সামগ্রী সরবরাহের অনুকূলে হাসপাতালের সার্ভে কমিটি সভাপতিসহ দুই সদস্যকে এক কোটি ৭৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৭ টাকার ওষুধ ও সামগ্রী বুঝে নিয়ে উল্লেখিত অর্থ পরিশোধ করেন। কিন্তু দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনাকালে হাসপাতালের স্টোর রেজিস্ট্রার ও ঔষধ এবং এমএসআর সামগ্রী বাস্তব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই করা হয়। নিরীক্ষাকালে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে উক্ত সরবরাহ করা ওষুধ ও এমএসআর সামগ্রী স্টোর রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এগুলো হাসপাতালের স্টোরে পাওয়া যায়নি। গত ২৭ জানুয়ারি দুদকের অভিযানে এ তথ্য প্রাপ্তির পর গত ২ ফেব্রুয়ারি উক্ত ঘাটতি পূরণের উদ্দেশ্যে আসামিরা গোপনে একটি ট্রাকে ঔষধ ও এমএসআর পণ্য এনে স্টোরে মজুদের অপচেষ্টা করেন। গোপন সূত্রে এ খবর পেয়ে দুদক আবারও হাসপাতালে ওইদিন অভিযান চালায়। এসময় দুদক কর্মকর্তারা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ওষুধ ও এমএসআর বোঝাই উক্ত ট্রাক আটক করে। এসব অপরাধের অভিযোগ এনে আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক মামলাটি দায়ের করে।
মামলার বিবরণ থেকে আরও জানা যায়, পরবর্তী তদন্তকালে এজাহারে বর্ণিত অপরাধের সঙ্গে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে রুজুকৃত মামলায় তাদের আসামি করা হবে।
দুদকের পিরোজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মোজাম্মেল হোসেন এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুদক কর্মকর্তাদের অভিযানে প্রাপ্ত দুর্নীতি, অনিয়ম ও গরমিলের ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তীতে অধিকতর তদন্তে ঘটনার সঙ্গে অন্য আরও কেউ জড়িত থাকলে তারাও এ মামলায় আসামি হবেন।
এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আমি বর্তমানে দাপ্তরিক কাজে ঢাকাতে আছি। আর মামলা হলে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।