
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে রাস্তাসহ ফুটপাত দখ.ল করে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা : ভোগান্তিতে নগরবাসী।
প্রায় প্রতিদিন বরিশালের বিবির পুকুর পাড় থেকে হেমায়েতউদ্দিন সড়ক ও গীর্জা মহল্লার বাসিন্দারা যানজট এবং হকারদের মধ্য দিয়ে ঠেলাঠেলি করে পথ চলতে বাধ্য হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় এ কে স্কুলের শিক্ষার্থীদের। যদিও স্কুল বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। স্কুলের দুপাশের প্রবেশপথ দখল করে ভাসমান বাণিজ্যিক পসরা ছাড়াও রয়েছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক তৎপরতা। যে কারণে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন এসে জড়ো হয় সড়কের দুপাশে। ঈদকে সামনে রেখে রাস্তার দুপাশে বিভিন্ন ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে ভ্রাম্যমান হকাররা। এখানে রীতিমতো পার্কিং বানিয়ে যানবাহন রাখা হয় বলে দাবি সাধারণ পথচারীদের। বেশ কয়েকজন পথচারী বলেন, এমনিতেই সদর রোডের বিবির পুকুর পাড় মোড় থেকে চকবাজার ও ফলপট্টি মোড় পর্যন্ত হেমায়েতউদ্দিন সড়কের (গীর্জা মহল্লা) প্রস্থ মাত্র ২০/২৫ ফিট। রাস্তার দুপাশেই ভাসমান দোকান, দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহন ও অটোরিকশার যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতায় চরম বিশৃঙ্খলা চোখে পড়ে ৪ মার্চ দুপুরে। এ সড়কে থাকা লেচুশাহ মাজারকে ঘীরেও যানজট হচ্ছে।
সন্ধ্যায় মাজারের ভিতরে ভক্তদের জন্য ইফতার আয়োজন করেন আশেপাশের ব্যবসায়ীরা। মাজারের পিলার একটু সড়কের ভিতর এগিয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে এখানেই বিভিন্ন মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চালকরা তাদের পার্কিং বানিয়ে দিয়েছে। আবার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের গাড়ি রাখার স্ট্যান্ড বানিয়ে নিয়েছেন লেচু শাহ মাজারের একদম গা ঘেঁষে। এর উপর সড়ক ও ফুটপাত দখল করে হোটেল মালিকদের ইফতার বিক্রি। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বড় ব্যবসায়ী ও হকাররা মিলেমিশে কে বি হেমায়েতউদ্দিন সড়কের ফুটপাতও ইজারা নিয়ে নিয়েছে। একে স্কুল সংলগ্ন জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের কয়েকজন বলেন, আমাদের কিছু কাস্টমার এখানে মোটরসাইকেল বা গাড়ি রাখলেও তা ক্ষণিকের জন্য। কিন্তু হকারদেরতো আমরা বসাইনি। তারা নিজে থেকে বসে পড়ে। কিছু বললে স্থানীয় এমন নেতার নাম ব্যবহার করে যে যাকে সবাই ভয় পায়।
এদিকে এই সড়কে আবাসিক হোটেল, প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, খাবারের হোটেল ছাড়াও রয়েছে শতাধিক বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট। আবার মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের প্রয়োজনীয় পোশাক, ইলেক্ট্রনিক্স বিভিন্ন পণ্যের বাজারও এখানে। স্বাভাবিকভাবেই এই সড়কে ভিড় আশেপাশের অন্য সড়কের তুলনায় বেশি বলে জানান চটপটি বিক্রেতা খলিল। সে তার ডালা সাজিয়ে বসার আয়োজন করছে বিবির পুকুর পাড় সংলগ্ন সড়ক ও ফুটপাত দখল করে। এখানে সন্ধ্যার পর থেকে পুকুরের তিন পাড়েই খাবারের মনোহারি পসরা বসে প্রতিদিন। এনিয়ে মাথা ব্যথা নেই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের। বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, চারজন মাত্র পরিদর্শক সিটি করপোরেশনের। তারা কাজ করলেও কতটা করবে। সবকিছু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রশাসক রায়হান কাওছার বলেন, বিবির পুকুর পাড় নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে। এখানে রকমারি খাবারের বাণিজ্যিক পসরা থাকা খুবই জরুরী। তাই বলে ফুটপাতে হাঁটাচলা বন্ধ করে দিয়ে নয়। এই সচেতনতা বোধ যদি মানুষের ভিতর না থাকে আইন করে কিছুই করা যাবে না। নগরীর যানজট নিয়ন্ত্রণে বরিশাল সিটি করপোরেশন ট্রাফিক বিভাগের প্রতি কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান তিনি।


