নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে বিএনপির ব্যানার টানিয়ে চাঁ.দা দা.বীর অভি.যোগ ২ নেতার বি.রু.দ্ধে।
বরিশাল জেলার উজিরপুরের ঐতিহ্যবাহী শিকারপুর বন্দরে চাঁদার দাবিতে দোকান ঘরে দুই দফা বিএনপির ব্যানার টানানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক জালিস মাহমুদ মৃধা ও রুহুল কুদ্দুস হাওলাদারের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে দোকান ঘর মালিক উজিরপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মাসুম বলেন, এই দোকান ঘরটি আওয়ামী লীগ আমলে শ্রমিক লীগের শিকারপুর ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক সুমন মৃধা জোর করে সাইনবোর্ড টানিয়ে ঘর তুলতে বাধা দেয়। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর দিন তিনি পুনরায় দোকান ঘরের দখল নেন। তখন যুবদলের এ দুই নেতা বাধা দিলে সিনিয়র নেতারা এসে পুনরায় কাজ করার ব্যবস্থা করে দেন। এ সময় যুবদল নেতা রুহুল কুদ্দুস সাংবাদিকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে নেন। দোকানঘটি সম্পূর্ণ নির্মাণ হলে অপর যুবদল নেতা জালিস মাহমুদ মৃধা দোকান ঘরটি সাময়িক সময়ের জন্য মৌখিকভাবে খাদ্য বান্ধব চালের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন। এ সুযোগে যুবদল নেতা ভুয়া ঘর ভাড়া চুক্তি সম্পন্ন করে খাদ্য বন্ধনের লাইসেন্স নেন। বিষয়টি ঘর মালিকের দৃষ্টিগোচর হলে ওই যুবদল নেতাকে গোডাউন ঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে ঘরের তালা বদ্ধ করে রাখেন। পরে স্থানীয় বিএনপির মধ্যস্থতায় ৩০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে পুনরায় ঘরের তালা খুলে দেন। কিছুদিন পর ২ যুবদল নেতা একত্র হয়ে দোকান ঘরের জায়গা আওয়ামী লীগ দখল করে নিয়েছিল এই অজুহাত দেখিয়ে দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সাংবাদিক নেতাকে গালিগালাজ করেন। শিকারপুরের চাঞ্চল্যকর ট্রলারচালক মাহবুবুল হাওলাদার নিখোঁজের বিষয়টি পুজি করে চাঁদা দাবী করে ওই দুই নেতা। যা পরে প্রকাশ্যে আসে।
এ ঘটনায় সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর ছবি সম্বলিত শিকারপুর ইউনিয়ন বিএনপির স্থায়ী কার্যালয় এর ব্যানার টানিয়ে দখলের চেষ্টা করেন। বিষয়টি সরফুদ্দীন আহমেদ সান্টুকে জানালে তিনি তার ব্যানার নামানোর নির্দেশ দেন। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর ছবি সম্বলিত আরেকটি ব্যানার নিয়ে স্থায়ী দখলের চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হুমায়ুন খান বলেন, ওই দোকান ঘরে বিএনপির সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে বিএনপি জানে না। অন্যের দোকান ঘরে ব্যানার লাগানোর কোন সিদ্ধান্ত বিএনপি দেয়নি। এর দায় ঐ যুবদল নেতাদের নিতে হবে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া বলেন, ওই দোকানের প্রকৃত মালিক শিকারপুরের বিশিষ্ট সমাজসেবক সর্বজন শ্রদ্ধেয় ডাক্তার আয়নাল হোসেন মৃধা এবং তার উত্তরসূরী সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান মাসুম। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে অন্যায়ভাবে তার দোকান ঘরের জমি দখল করে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড টানিয়ে রেখেছিল। আর বর্তমানে আমরা একই কাজ করতে পারি না। শিকারপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জসিম হাওলাদার জানান, দোকান ঘরটি সাংবাদিক মাসুম ৫ আগস্ট দখলে নেন।
ওই দোকান ঘর কোন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে দখল করতে বলেনি। এবং কাউকে বিএনপির পক্ষে দখল করতে ইজারা দেয়নি। শুধুমাত্র যুবদলের ওই দুই নেতার ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্যই বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে দখলের চেষ্টা করছেন। একই ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মশিউর মোল্লা জানান, যুবদল নেতা জালিস ও কুদ্দুস শুধু সাংবাদিক সাহেবের ঘরে নয় শিকারপুরে এ আর হাওলাদারের ব্যক্তিগত জুটমিল এর রাস্তা দখল করে চাঁদাবাজি করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই যুবদল নেতা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে যুবদল নেতা জালিস ও কুদ্দুসের চাঁদাবাজি সহ দখলবাজি সীমা অতিক্রম করেছে। তাই দলের সম্মান বাঁচাতে হলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ ব্যাপারে জালিস মাহমুদ বলেন, দোকান ঘরের জায়গা আওয়ামী লীগের দখলে ছিলো। এখন এটা আমরা দখল করে নেব । অপর যুবদল নেতা রুহুল কুদ্দুস বলেন, তখন সিনিয়র নেতাদের কথায় দোকান ঘর তুলতে দিয়েছিলাম। বর্তমানে আমি আমার মত পাল্টিয়েছি। এটা আমাদের দখলেই রাখবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী সুজা বলেন, সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান গং এই জমির ডিসিআর বলে বৈধ মালিক। তিনি একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।