নিজস্ব প্রতিবেদক :: আধিপ ত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘ র্ষে আহত স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মীর মৃ ত্যু।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রাণ গেল আরও একজনের। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী জসিম উদ্দিন ব্যাপারী অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে তিনি মারা যান। বিষয়টি দুপুর ১টার দিকে তার ছোট ভাই কাউছার হোসেন নিশ্চিত করেন।
নিহত জসিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরবংশী গ্রামের বাসিন্দা হজল করিমের ছেলে। পেশায় তিনি ছিলেন ঢালাই শ্রমিক। এছাড়া তিনি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন সক্রিয় কর্মী এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
নিহতের পরিবারের দাবি, গত ৭ এপ্রিল কৃষকদল নেতা জিএম শামীম ও মোস্তফা গাজীর সমর্থকেরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জসিমকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় প্রাইম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
রায়পুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক জানান, জসিম উদ্দিনের মৃত্যুর খবর তারা পেয়েছেন। নিহতের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। উল্লেখ্য, এর আগেই সংঘর্ষের আরেক শিকার বিএনপি কর্মী ও স্পেন প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান মারা যান। এ নিয়ে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল দু’জনে।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্র বলছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনের পর থেকে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে বিএনপির অভ্যন্তরে বিভাজন শুরু হয়। উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারীদের মধ্যে দানা বাঁধে উত্তেজনা। এরপর ৭ এপ্রিল বেড়ি ও বাবুরহাট এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। সংঘর্ষে ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক গাজীর লোকজন এবং শামীম গাজীর অনুসারীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়।
প্রচণ্ড উত্তেজনার মধ্যেই বিল্লাল মাঝি, আবু তাহের মাঝি ও জিহাদ হোসাইনের বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় প্রতিপক্ষ। তার জের ধরেই ৮ এপ্রিল ফের পাল্টা হামলায় শামীম গাজীর সমর্থকেরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরো এলাকা জুড়ে তখন থেকে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় নিহত সাইজ উদ্দিন দেওয়ানের বড় ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৬০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর র্যাব-১১ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জলিল দর্জিকে ১৩ এপ্রিল গ্রেফতার করে রায়পুর থানায় হস্তান্তর করে। একই ঘটনায় উপজেলা বিএনপি ১৬ নেতাকর্মীকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে।