নিজস্ব প্রতিবেদক :: দীর্ঘ একযুগ পরে বরিশাল নগরীর আলোচিত মমতাজ বেগম হত্যা মামলার সকল আসামীকে খালাস দিয়েছে আদালত। বরিশাল দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ রায় দেন। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, নগরীর দক্ষিণ সাগরদির আজিজ হাওলাদারের ছেলে মোঃ বাবুল হাওলাদার, উত্তর রুপাতলীর শাজাহান হাওলাদারের ছেলে মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাবু, সিরাজুল হক গাজীর ছেলে মোঃ জয়নাল আবেদীন রুবেল ও দক্ষিণ সাগরদির মোঃ আনিচ মোল্লার ছেলে মোঃ আরিফ।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি এডভোকেট মহাসিন মন্টু বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে পিপি হিসেবে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর রাত ৪টার দিকে নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রূপাতলী সাগরদী রোডের ফকিরবাড়ি স্কুল সংলগ্ন মমতাজ ভিলার বাসিন্দা করিম হাওলাদারের স্ত্রী মমতাজ বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে দুবৃত্তরা।
এ ঘটনায় ওই দিন নিহত মমতাজ বেগমের ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে এসআই এআর মুকুল ও এসআই দেলোয়ার হোসেন তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করলে তাতে নারাজি দেয় বাদী আলমগীর হোসেন। এরপর অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেষ দেয় আদালত।
সিআইডির পুলিশ পরির্দশক জেসমিন আক্তার পল্লবী ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল খালাসপ্রাপÍ চার আসামীকে অবিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে।
তদন্ত প্রতিবেদনে সিআইডির পুলিশ পরির্দশক জেসমিন আক্তার পল্লবী উল্লেখ করেন, চার্জশীটে অভিযুক্ত ২নং আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাবুকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাবু বলেন, ২০১৪ সালের ৬ নভেম্বর মমতাজ বেগমের বাসার সামনে বাবুলের চায়ের দোকানে আসে। আসামীরা সবাই মমতাজ বেগমকে চাপ প্রয়োগ করে টাকা আদায় করবে বলে পরিকল্পনা করে।
কিন্তু আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাবু এতে রাজি হয়নি। এরপর ১০ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আসামীরা পুনরায় বাবুলের দোকানে আসে, সেখান থেকে মমতাজ বেগমের বাসায় যায়। আর আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাবুকে বাসার সামনে পাহাড়ায় রেখে যায়। আধাঘন্টা পরে রক্তমাখা অবস্থায় রুবেল বের হয় এবং সে জানায় মমতাজ চাচি আলমারী চাবি না দেয়ায় আরিফ ও একটি ছেলে তাকে টেনে ধরে আর সে (রুবেল) দা দিয়ে কোপ মারে। দায়ের কোপের কারণে তাৎক্ষণাৎ মমতাজ বেগম মারা যায়। এরপর আসামী আরিফ, রুবেল ও বাবুল পালিয়ে যায়। পরের দিন ১৫ নভেম্বর আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর হত্যায় আসামীরা প্রতক্ষ্যভাবে জড়িত মর্মে আদালতে জবানবন্দি দেয়। এ মামলায় স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত বুধবার আদালত রায় ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে মামলার বাদী আলমগীর হোসেন বলেন, বোন হত্যার ন্যয় বিচার একযুগ পরেও তিনি পাননি। তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।