নিউজ ডেস্ক :: ১০ দফা দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করছে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ।
দাবি পূরণ না হওয়ায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। চলবে বেলা দুইটা পর্যন্ত।
১১ মে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ বলেছিল, ২৪ মের মধ্যে দাবি আদায় না হলে তারা ২৫ মে প্রতীকী কর্মসূচি পালন করবে। এদিন (আজ) তারা সকাল ছয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত সারা দেশের সব পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি চালানোর ক্ষেত্রে কর্মবিরতি পালন করবে।
বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে এই পরিষদ গঠিত। পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ছয়টায় কর্মবিরতির কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সকাল ১০টায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন একটি বৈঠক ডেকেছে। এই বৈঠকের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তাঁরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।
পরিষদের ঘোষণা অনুযায়ী, কর্মবিরতিতে জ্বালানি তেলের উত্তোলন, পরিবহন ও বিপণন বন্ধ থাকবে। তবে হজ ফ্লাইট ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সচল রাখার জন্য উড়োজাহাজের তেল পরিবহন চালু থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও যেসব পেট্রলপাম্পের সঙ্গে পুলিশের গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহের চুক্তি আছে, কেবল তারই পুলিশের গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ করতে পারবে।
পরিষদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে তেল বিক্রির কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ইজারা ভূমির ইজারা মাশুল আগের মতো বহাল রাখা। পাম্প-সংযোগ সড়কের ইজারা নবায়নে আবেদনপত্রের সঙ্গে নির্ধারিত পে-অর্ডার জমা দিলেই তা নবায়ন বিবেচিত করা। বিএসটিআই শুধু ডিসপেন্সিং ইউনিট স্ট্যাম্পিং ও পরিমাপ যাচাই করবে। আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফি ও নিবন্ধনপ্রথা বাতিল করা। পরিবেশ, কলকারখানা ও ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্সের বিধান বাতিল করা। ঘরের মধ্যে বা খোলা স্থানে অবৈধভাবে মেশিন বসিয়ে জ্বালানি বিক্রি বন্ধ করা এবং ডিলারশিপ ছাড়া বিপণন কোম্পানির সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ করা। ট্যাংকলরির চালকদের লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স ইস্যু সহজ করা। রাস্তায় যেখানে-সেখানে ট্যাংকলরি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা না করে তা তেলের ডিপো গেটেই সম্পন্ন করা। সব ট্যাংকলরি জন্য আন্তজেলা রুট পারমিট ইস্যু করা।
পরিষদ বলছে, লাইসেন্স, বিদ্যুৎ, স্টাফের বেতনসহ সব খরচ বেড়েছে; কিন্তু কমিশন কমে গেছে। নতুন করে পরিবেশ, ফায়ার, বিএসটিআই, কলকারখানা ও বিআরসি লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এগুলোর ফি অনেক বেশি। ডিপো নেই—এমন জেলায় তেল নিতে গিয়ে আন্তজেলা পারমিট না থাকলে ট্যাংকলরির চালকেরা হয়রানির শিকার হন। রাস্তার ওপর কাগজপত্র পরীক্ষা বন্ধ ও ডিপোয় তা নিশ্চিত করার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিএসটিআই এখন নানা যন্ত্রাংশের জন্য অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ইজারার হার হঠাৎ ১৫০ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এই অযৌক্তিক খরচ আর বর্তমান কমিশনের হারে ব্যবসা চালানো অসম্ভব। তাই তাঁরা যৌক্তিক দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন চান।