নিউজ ডেস্ক :: ঈদ উপলক্ষে কেনা জামাটি ঘরে ঝুলছে। কিন্তু যার জন্য জামা কেনা হয়েছিল, সেই ছোট্ট আছিয়া আর নেই। গতকাল শুক্রবার বাড়ি থেকে খেলতে বেরিয়ে মোরটসাইকেলের ধাক্কায় সে নিহত হয়েছে।
আছিয়া আক্তার (৪) উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের কিসামত মেনানগর সরকারপাড়া গ্রামের আঞ্জুয়ারা বেগম ও মজিদুল্লাহ দম্পতি মেয়ে।
স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মা–বাবার একমাত্র সন্তান আছিয়া। গতকাল দুপুরে তার মা সংসারের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। আছিয়া উঠানে খেলছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সে উঠান পেরিয়ে পাশের বামনদীঘি-ডাঙ্গিরহাট সড়কে যায়। তখন দ্রুতগামী একটি মোটরসাইকেল আছিয়াকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।
স্থানীয় লোকজন আছিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আছিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাকে বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।
মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘কলিজা মোর প্রতিদিন খুলিত খেলাখেলে। মরার সড়ক মোর বুক খালি করি দিছে। মোটরসাইকেল মোর জাদুটা মারি ফেলছে। ধাক্কা দিয়া পালে গেইছে। একনা দয়ামায়া দেখায় নাই। মুই মোর জাদুক কোনটে পাইম।’
মজিদুল্লাহ বলেন, ‘কত শখ ছিল, মেয়েটাকে নিয়ে এবার আনন্দে ঈদ কাটাব। তার জন্য জামা কিনেছিলাম। এখন কীভাবে ঈদ করব? আমরা তো ঈদের আগে কবরস্থানে গেলাম।’
প্রতিবেশী প্রিয়তুল্লাহ সুমন বলেন, ‘বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের কারণে প্রতিদিনই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। ঈদ এলেই প্রতিবছর এ সড়কে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যায়। একটি ছোট্ট হাত চিরতরে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। ঈদের হইচই থেমে গেছে এক মায়ের কান্নায়।’