নিউজ ডেস্ক :: পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা বিএনপির অফিস ভাঙচুরের মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিনিধি নাঈম হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৮ জুন) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নাঈমকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মারধর করে মব করেন। নাঈমের করা ফোন কলে দুমকি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রদল নেতার কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
পরে তাকে ২০২২ সালের সালে দুমকি উপজেলা বিএনপির অফিস ভাঙচুর মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে দেখানো হয়। পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো চালান কপিতে দুমকি থানার এসআই মোঃ নুরুজ্জমান উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ৫ মার্চ দুমকি উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে সমাবেশ চলাকালে এজাহারভুক্ত আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান।
ওই ঘটনায় সাংবাদিক নাঈম হোসেনের সংশ্লিষ্টতা পান পুলিশ। তবে আদালতে পাঠানো কপিতে ছাত্রদল নেতাদের মারধরের কথা উল্লেখ করেনি পুলিশ। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও চিত্রে তাকে লাঞ্ছিত করার দৃশ্য দেখা গেছে। সেই ভিডিও এই পত্রিকার ডেস্কে রয়েছে।
নাঈম থানা হেফাজতে বলেন, শনিবার কোরবানি উপলক্ষ্যে গ্রামের বাড়ি দুমকিতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। এরপর বিকেলে তিনি পটুয়াখালী জেলা শহরের দিকে রওনা হন। এ সময় উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সুমন শরীফ ও তার লোকজন তাকে আটক করে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে শারীরিক নির্যাতন চালান। এ সময় নাঈম দুমকি থানার ওসি মোঃ জাকির হোসেনকে কল করে সহায়তা চাইলে তিনি পুলিশ ফোর্স পাঠান।
পরে ঘটনাস্থলে থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দুমকি থানায় নিয়ে যান। ছাত্রদল নেতা সুমনের সঙ্গে তার পূর্বের বিরোধ ছিল বলে জানান নাঈম। নাঈম হোসেনের মা শিরিন সুলতানা জানান, তার বসতঘরসংলগ্ন একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছিলো। ওই পাবলিক টয়লেটের দুর্গন্ধে তাদের বসবাস অযোগ্য হয়ে ওঠে।
পরে তার ছেলে দুমকি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাবলিক টয়লেটটি অপসারণ করা হয়। এর পর থেকে সুমন শরীফ তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসতেন।
এ ছাড়া গত ৫ আগস্টের পরে সুমন শরীফ ও তার লোকজন তাদের বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালান বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে জানতে দুমকি উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সুমন শরীফের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, স্থানীয় ছাত্রদলের সদস্যসচিবসহ কয়েকজন তাকে আটক করেন। এ সময় ভুক্তভোগীর কলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নাঈম একসময় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তাই তাকে বিএনপির অফিস ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।