নিউজ ডেস্ক ::
নোয়াখালীর কারামাতিয়া কামিল মাদরাসা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হাফেজ মো. শিহাব হোসেনকে ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সম্প্রতি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির কারামাতিয়া কামিল মাদরাসাসহ নোয়াখালীর ৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে আব্দুল মান্নানকে সভাপতি, হাফেজ মো. আমিরকে সাধারণ সম্পাদক ও হাফেজ মো. শিহাব হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, শিহাব হোসেন দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতি ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিনের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। তার এই হঠাৎ রূপান্তরে ছাত্র রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে চাঞ্চল্যতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
রিয়াদ মাহমুদ নামের কারামাতিয়া মাদরাসার এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন হাফেজ শিহাব, যিনি স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে ওই মাদ্রাসায় ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। সে সময় তার পরিচিতি ছিল আশিকুর রহমান শিহাব নামে এবং তিনি নোয়াখালী সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী শিহাব উদ্দিন শাহিনের অনুসারী হিসেবে রাজনীতি করতেন। পরবর্তীতে ৫ আগস্ট কারামাতিয়ায় ছাত্রদলের কমিটি গঠনের সময় তিনি নিজের নাম বদলে ‘হাফেজ শিহাব হোসেন’ হিসেবে পদ গ্রহণ করেন। নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি—এ ধরনের সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তারা দলের আদর্শে বিশ্বাস করে না, বরং সুযোগ নিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে।
আব্দুর রহিম নামের আরেক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা হাফেজ শিহাবকে আশিক নামে এবং ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে চিনতাম। সে আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতো।কমিটি দেওয়ার পর সে যে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছে তা আমরা মিলাতে পারি নাই। যখন সে ছাত্রদলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিলো তখন আমরা শিউর হলাম। ছাত্ররাজনীতি এখন এতটাই বিবর্তিত যে, আদর্শ বদলানো যেন জামা বদলানোর মতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এখন দেখার বিষয় ছাত্রদল শিহাবকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে গ্রহণ করে কিনা, নাকি এই ঘটনা শুধু আলোচনা আর বিতর্কেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে হাফেজ মো. শিহাব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আওয়ামী লীগ নেতা শিহাব উদ্দিন শাহীনের এলাকায় বড় হয়েছি। তাই তার নির্বাচনে তার জন্য কাজ করেছি। এটাকে জামায়াত শিবির পুজি করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা করছে। আমাদের দেশে বাবা একদল করে ছেলে একদল করে। তাই বলে কি বাবা ছেলের সাথে কথা বলবেনা? আসলে কারো ভালো কেউ দেখতে পারে না। তাই মিথ্যা প্রচারণা করছে।
কারামাতিয়া মাদরাসার নবগঠিত ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিহাবকে নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি দেখেছি। তবে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি আমাদের কারামাতিয়া মাদরাসায় ছিল না এবং হওয়ার কথাও আমি শুনি নাই। তাই শিহাবের ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি মিথ্যা।