নিউজ ডেস্ক :: ৫ আগস্টের পর ভারত হয়ে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি এখন দুবাইতে অবস্থান করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। অথচ তাকে ধরতে বুধবার (২ জুলাই) দুপুর থেকে রাজশাহীরে একটি বাড়ি ঘেরাও করেছিলেন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা।

পরে খবর পেয়ে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। তখন যুবদলের এক নেতাকে ফোন করে রনি বলেছেন, ‘এত কষ্ট করছেন, আমি আপনাদের থেকে অনেক দূরে। আমাকে খুঁজে লাভ হবে না, পাবেন না।’

আওয়ামী সরকারের পতনের দিনই আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগ নেতা রনি। ইতোমধ্যে তিনি দেশত্যাগও করেছেন। তবে তার অবস্থানের খবরে বুধবার দুপুরে নগরের পদ্মা পারিজাত এলাকার একটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ঘেরাও করেন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দলও ভবনটিতে গিয়ে তল্লাশি শুরু করে।

এ সময় জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকার ডিকোকে ফোন করেন যুবলীগ নেতা রনি। তিনি বলেন, ‘ডিকো ভাই, আপনারা এত কষ্ট করে অভিযান করছেন। আমি আপনাদের থেকে অনেক দূরে। আমাকে খুঁজে লাভ হবে না, পাবেন না। ঠিক সময় মতো আমি নিজেই আত্মসমর্পণ করব, ধরা দিব।’
এ সময় ডিকো বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আপনি আত্মসমর্পণ করেন। নিজের দোষ স্বীকার করেন। আমরা আপনার জন্য দোয়া করি।’

তখন সময় হলেই আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানান রনি। এ সময় ডিকো জানতে চান, ‘সিটি করপোরেশনের অস্ত্র আপনার ছিল, নাকি মেয়র সাহেবের ছিল? আপনার ভিডিও ফুটেজ আছে।’ জবাবে রনি বলেন, ‘ভাই, কোথায় আমার হাতে অস্ত্র দেখেছেন? ভিডিওতে দেখান। ছবিতে দেখান। আমার হাতে অস্ত্র নাই।’ ডিকো বলেন, ‘রাজশাহীতে অস্ত্রের রাজনীতি শুরুই করেছেন আপনি, ভাইয়া।’

রনি বলেন, ‘বাজে কথা।’ ডিকো বলেন, ‘ঠিক আছে। ওপরে আল্লাহ আছে। সত্য-মিথ্যা আল্লাহই জানে।’ রনি বলেন, ‘আমরা মুসলমান মরতে হবে। যদি অন্যায় করি আল্লাহ বিচার করবে। ভালো থাকেন ভাই, দেখা হবে ইনশাল্লাহ।’

রনির এই ফোনের পর অভিযান শেষ হয়। নেতাকর্মীরাও ভবনের সামনে থেকে চলে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা ডিকো বলেন, ‘এইমাত্র সে (রনি) আমাকে ফোন করেছিল। যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সব নেতারা এখানে আছেন। বুঝতে পারলাম, এই বাড়িতে অভিযান হওয়ায় তিনি খুব কষ্ট পাচ্ছেন।’

ঘটনার পর সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা রনিকে তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেই পাওয়া গেছে। তিনি জানান, সরকার পতনের তিন-চার মাস পর তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন। রনি বলেন, ‘এরা কোনোদিন সামনে আসার সাহস পায়নি। এখন ফাঁকা মাঠে না জেনেশুনে অযথা একটি বাড়ি এভাবে ঘেরাও করেছে। তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য দেশের মানুষ এখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারছে।’

রনির ঘনিষ্ঠ একজন কালবেলাকে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর রনি ভারত হয়ে এখন দুবাইতে অবস্থান করছে। সুতরাং তাকে রাজশাহীর একটি ভবনে পাওয়ার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। বিএনপির নেতাকর্মীদের কষ্ট হচ্ছে এজন্য হয়তো রনি নিজেই ফোন করে বলেছে যে, ‘আমাকে খুঁজে লাভ নেই, আমি আপনাদের থেকে অনেক দূরে।’