নিউজ ডেস্ক :: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হাবিবউল্লাহর বিরুদ্ধে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, কিস্তিতে ঘুস নেন ওই অধ্যক্ষ। পাশাপাশি প্রভাব খাটিয়ে নিজের স্বজনদের চাকরি দিয়েছেন তিনি। খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাজনীতি করার কথা বলেন এ অধ্যক্ষ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করছেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ মো. হাবিবউল্লাহর ঘুস নেওয়ার ভিডিও এবং অডিও যুগান্তরের এ প্রতিনিধির কাছে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে দশমিনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। প্রধান অতিথি থেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। ওই উদ্বোধন অনুষ্ঠান সফলের দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হাবিবউল্লাহ।
চাকরি হারানোর ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে করিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একজন অতিথি প্রশিক্ষক যুগান্তরকে বলেন, ‘বর্তমানে করিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৮ জন অতিথি প্রশিক্ষক রয়েছে। অধ্যক্ষ হাবিবউল্লাহ এ আটজনের প্রাপ্ত বেতন থেকে প্রতি মাসে ৯ হাজার ৯০০ টাকা করে ঘুস নেন। ২০২৪ সালের মে মাস থেকে তিনি কিস্তিতে ঘুস নেওয়ার নিয়ম চালু করেছেন। ঘুস দিতে অস্বীকৃতি জানালে মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম নামে দুই প্রশিক্ষককে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়। খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাজনীতি করা লোক পরিচয় দিয়ে প্রকাশ্যে ঘুস নিচ্ছেন।’
ওই ভুক্তভোগী আরও বলেন, ‘অধ্যক্ষ হাবিবউল্লাহ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইলেক্ট্রিক্যাল পদে ভাগ্নে মো. আরিফুল ইসলাম ফাহাদ ও অ্যাকাউন্টেন্ট পদে ভাগ্নি বউ জাহানারা আক্তারকে চাকরি দিয়েছেন।’ অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ হাবিবউল্লাহ প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। জাহিদ নামে সাবেক এক ছাত্রদল নেতা জানান, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তিনি প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য জানতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, অধ্যক্ষ হাবিবউল্লাহ প্রভাব দেখিয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। অভিযোগের বিষয় অধ্যক্ষ হাবিবউল্লাহ বলেন, ‘ঘুস নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।
আমি নিয়ম লঙ্ঘন করে কোনো আত্মীয়কে চাকরি দেয়নি। সাবেক ছাত্রদল নেতা জাহিদ একবার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। দ্বিতীয়বার প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ না থাকায় তাকে নিষেধ করা হয়েছে। খারাপ আচরণ করিনি।’ হাবিবউল্লাহ বিএনপির রাজনীতি করেন দাবি করে বলেন, ‘আমি আমার নিজ এলাকার একটি ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলাম। আমার বাবাও বিএনপির করতেন।’ এ বিষয়ে দশমিনা ইউএনও ইরতিজা হাসান বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’