নিজস্ব প্রতিবেদক :: দেশজুড়ে ভয়ংকর গোপন জুয়ার সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে ‘Easy Cash’ (ইজি ক্যাশ) নামের একটি অনলাইন অ্যাপ। প্রতিদিন হাজারো তরুণ-তরুণীকে মোহে ফেলে, পরে সর্বস্বান্ত করছে এই ডিজিটাল জুয়ার চক্র। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে দেশি-বিদেশি একাধিক চক্র, যাদের টার্গেট সরাসরি বাংলাদেশি যুব সমাজ।
প্রথমে বোনাসের লোভ, পরে সর্বনাশ
‘ইজি ক্যাশ’ অ্যাপে ঢোকার আগে ব্যবহারকারীদের মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র (ভোটার আইডি), এমনকি নিজস্ব ছবি দিয়ে ফেইস ভেরিফিকেশন করতে হয়। এতে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সম্পূর্ণভাবে প্রতারকদের হাতে চলে যায়।
এরপর শুরু হয় ফাঁদ:
➤ অ্যাপে ঢুকলেই দেওয়া হয় ৬০০ টাকা 'বোনাস'।
➤ ৬০০ টাকা দিয়ে ৬০০ টাকা ফেরত নেয় না বারোশো টাকা নেয় ১২০০ টাকা নিয়ে আবার ১৫০০ টাকা দেয় ১৫০০ টাকা দিয়ে আবার ৩০০০ টাকা চায়।
না দিলে ফোনবুকে থাকা নাম্বারগুলো হ্যাক করে বিভিন্ন লোকদেরকে ফোন দেয় এবং টাকা চায় গালাগালি করে, এই নাম্বার গুলো দিয়ে প্রতারক চক্র কল দিত 01877-348738
01877-348738
01312852300
01896135769
01600249328
+92 332 5817951
+92 322 6752462
এই পর্যায় পর্যন্ত ব্যবহারকারী ভাবে সে “লাভ” করছে। কিন্তু আসল প্রতারণা শুরু হয় এর পরেই।
➤ ব্যবহারকারী যদি ৩০০০ বা তার বেশি টাকা অ্যাপে ঢোকায়—সেখানে থেকে আর এক টাকাও ফেরত আসে না।
➤ টাকা আটকে রাখা হয় বা পুরো অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়।
ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ছবি ও তথ্য দিয়ে ভয়াবহ ব্ল্যাকমেইল
আরও ভয়াবহ তথ্য হলো—যারা সেই ৬০০ টাকা বা ১২০০ টাকা ফেরত না দেয়, বা বোনাস নিয়ে চুপ থাকে, তাদেরকে টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল শুরু করে প্রতারক চক্র।
➤ ব্যক্তিগত ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেখিয়ে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়
➤ ভয় দেখানো হয়—এইসব তথ্য ভাইরাল করে দেওয়া হবে
➤ কেউ কেউ বলেছেন, হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে তাদের পরিবার-পরিজনকে ফোন করে অপমানজনক কথা বলা হয়েছে
সামাজিক মাধ্যমের বিজ্ঞাপন থেকে শুরু
এই অ্যাপটি মূলত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবের স্পন্সর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ‘বিনিয়োগ করুন, দ্বিগুণ টাকা ফেরত নিন’—এমন লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রথমেই ফাঁদে ফেলা হয় সহজ-সরল তরুণদের।
সাইবার অপরাধ দমন বিভাগ কি করছে?
এ ধরনের জুয়ার অ্যাপ বাংলাদেশে সরাসরি নিষিদ্ধ, কিন্তু তবুও দিনের পর দিন “ইজি ক্যাশ” সক্রিয় থেকে যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে—
🔹 কোথা থেকে এই অ্যাপটি পরিচালিত হচ্ছে?
🔹 কারা এর মূল হোতা?
🔹 কেন এখনো এই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ বলছে, এখনই যদি এই চক্রের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান অভিযান না চালানো হয়, তাহলে লাখো তরুণ অনৈতিক পথে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে।
তীব্র জনমত গড়ে তুলুন, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন
'ইজি ক্যাশ' নামের এই অনলাইন জুয়া অ্যাপ বন্ধে সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা, পুলিশ সদর দপ্তর ও বিটিআরসির হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি। প্রতারক চক্রকে ধরতে প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।