অনুসন্ধানী প্রতিবেদক :: দিনের পর দিন ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ পাতছে অনলাইন জুয়া অ্যাপ ইজি ক্যাশ (Easy Cash)। তরুণদের টার্গেট করে, মোবাইল নম্বর, ভোটার আইডি ও ছবি দিয়ে ফেইস ভেরিফিকেশন করিয়ে ফাঁদে ফেলছে এক সংঘবদ্ধ ডিজিটাল জুয়া চক্র। এবার সেই চক্রের ভয়াবহতার সরাসরি শিকার হয়েছেন বরিশাল নগরীতে বসবাসরত রুবেল নামের এক যুবক।
ভুক্তভোগী রুবেল জানান—
“আমি প্রথমে ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দেখে ইজি ক্যাশ অ্যাপটি ইন্সটল করি। অ্যাপেই সাথে সাথে আমাকে ৬০০ টাকা দেয়। কিছুক্ষণ পর অচেনা একটি নাম্বার থেকে কল আসে নাম্বারটি হল ০১৮০৪৮০২৪৯৩ । ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি জানায়, যদি আমি ওই ৬০০ টাকা ফেরত দিই, তাহলে আমাকে ১২০০ টাকা দেওয়া হবে। আমি লোভে পড়ে সঙ্গে সঙ্গেই ৬০০ টাকা ব্যাক করি এবং সত্যিই ১২০০ টাকা পাই।”
“এরপর আবারও ফোন আসে। এবার বলা হয়, ১২০০ টাকা সুদ হয়েছে ৩০০০ টাকা, আর ওই বিকাশট নাম্বারে তিন হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে । তখন আমার সন্দেহ হয়—এটা তো ধোঁকাবাজি! আমি আর টাকা দিইনি। তখনই শুরু হয় হুমকি।”
রুবেল আরও জানান—
“টাকা না দেওয়ায় ওই নাম্বার থেকে বারবার ফোন করে আমাকে গালাগালি করা হয়, ভয় দেখানো হয়। তারা আমার ফোন হ্যাক করে আমার পরিচিতদের নাম্বার সংগ্রহ করেছে এবং আমাকে বলে—তোমার ছবি ভাইরাল করে দেবে, সবাইকে কল দেবে। আমি চরম আতঙ্কে আছি।”
রুবেল বলেন—
“আমি পুলিশ প্রশাসন, সিআইডি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কাছে আকুতি জানাই—এই প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনা হোক। ইজি ক্যাশ অ্যাপ বন্ধ করা হোক। আর যেন কোনো তরুণ এই ভয়ঙ্কর ফাঁদে না পড়ে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক করুন।”
সাইবার অপরাধ বিশ্লেষকরা মনে করছেন, “ইজি ক্যাশ”-এর মতো অ্যাপগুলো মূলত সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে। এতে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই নয়, মানসিকভাবেও তরুণদের বিপর্যস্ত করে ফেলে।
🔹 অ্যাপটির সার্ভার, মূল অপারেটর ও লেনদেন চিহ্নিত করে অবিলম্বে আইনি পদক্ষেপ
🔹 ভুক্তভোগীদের কাছে থেকে অভিযোগ গ্রহণ ও হেল্পলাইন চালু
🔹 সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারি প্রচারণা পরিশেষে বলি:
একজন রুবেল নয়—দেশজুড়ে এমন হাজারো রুবেল প্রতিদিন এই অনলাইন জুয়া চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। প্রশাসনের দৃষ্টি এবং জনসচেতনতা ছাড়া এই ভয়াবহতা থামবে না।