নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) একাডেমিক ও গবেষণায় সক্ষমতা বাড়াতে হিট প্রকল্পের আওতায় ৬ কোটি টাকার দুইটি প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। গবেষণার জন্য ববির সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ প্রায় এক কোটি টাকা ও রসায়ন বিভাগ পাঁচ কোটি টাকার প্রকল্প পেয়েছে।
একই খাতে ববির ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রকল্প পেলেও টাকার অংশ জানা যায়নি। এই প্রকল্পগুলোয় গবেষক সহকারী হিসাবে কাজ করবে ববির ১০ শিক্ষক। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরির অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম।
প্রাথমিকভাবে ববি থেকে মোট ৬টি প্রকল্প ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগ থেকে স্ব স্ব উদ্যোগে কিছু প্রকল্প জমা পড়লেও শেষ পর্যন্ত তিনটি প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়। গত ২৭ আগস্ট এই প্রকল্প চূড়ান্ত হয় বলে জানিয়েছে ববির পরিকল্পনা দপ্তর।
এই প্রকল্পের অনুমোদনের খবরে ববির শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় এই অর্জন একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ববির পরিকল্পনা দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গবেষণা সহকারী কাজ করবেন ববির রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবির হোসেন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওহিদুর জামান ও ড. সৈয়দ আশিক ই ইলাহী, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ ও সহকারী অধ্যাপক ফারজানা আক্তার। ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল আল মাসুদ, ড. তাজিয়ুর রহমান এবং ড. সোহেল চৌধুরী।
উপ-প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড. তারেক মাহমুদ আবীর বলেন, আমরা মনে করি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হবে। আমরা উপকূলের মানুষদের নিয়ে গবেষণা করবো। তাই আমরা এমনভাবে কাজ করতে চাই, যা পরবর্তী বিশ বছর পরেও আমাদের রেফারেন্স ধরে গবেষণা করা যায়।
আরেক উপপ্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন বলেন, দেশের উপকূলীয় এলাকায় মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ এক নীরব হুমকি। আমরা বিশ্বাস করি এই গবেষণা সমুদ্রের জীববৈচিত্র ও মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
তথ্যমতে, উচ্চশিক্ষার গুণগত উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় বাজার চাহিদাভিত্তিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাল সংযোগ বৃদ্ধি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠা, বিডিআরের সক্ষমতা বাড়াবে, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের কার্যক্রম বেগবান করা, ইনোভেশন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা, প্রতিযোগিতামূলক গবেষণার উদ্ভাবনী প্রকল্প চালু করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে পাঁচ বছর মেয়াদি হিট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫০ দশমিক ৯৬ শতাংশ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ বহন করবে বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও রূপান্তর সাধন।