আব্দুর রহমান বাবু সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক। তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জগলুল হায়দারের ঘনিষ্ঠভাজন ছিলেন। আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব।
গত শুক্র ও শনিবার গিয়ে দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদের হরিণখোলা চর দখল করে দুটি ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কাজে জড়িত কয়েকজন জানান, প্রতি ঘনফুট তিন টাকা হারে গড়ে ৫০-৬০ হাজার ঘনফুট বালু বিক্রি হচ্ছে। এভাবে লাখ লাখ টাকার বালু তোলা হচ্ছে। আগে বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন আব্দুর রহমান বাবু। এখন যুবদল নেতা আঙ্গুর তাঁর সহযোগী হিসেবে এ কাজে যুক্ত হয়েছেন। আঙ্গুরের ম্যানেজার রাকিবুলের কাছে টাকা জমা দিয়ে রসিদ নিতে হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কপোতাক্ষ নদের পশ্চিম তীরে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পাতাখালি, জেলেখালি ও ঝাপা গ্রাম। নদের পূর্ব তীরে কয়রা উপজেলার হরিণখোলা, গোবরা, ঘাটাখালি গ্রাম। অবাধে বালু তোলায় এসব গ্রামের বাঁধ ধসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
বাঁধের কাজের ঠিকাদার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম অভিযোগ করেন, কপোতাক্ষ নদ দুই উপজেলার সীমান্ত এলাকায় পড়লেও শ্যামনগর উপজেলার বাসিন্দারা এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। তারা কপোতাক্ষের শাখা নদী খোলপেটুয়ার চরে বালুবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে যুবলীগ নেতা বাবু একা দখল করলেও এখন তাঁর সহযোগী হয়েছেন যুবদলের এক নেতা। তাদের টাকা না দিয়ে এক ফুট বালুও আনা যায় না।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বলেন, বালুবাণিজ্যের কারণে উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভিন্ন উপজেলার লোক হয়েও দুই নেতা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বলগেট আটকে টাকা আদায় করছেন। অবৈধ বালুবাণিজ্য বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি।
অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে যুবলীগ নেতা আব্দুর রহমান বাবুর সঙ্গে ফোনে কথা হয়। তিনি প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরে কপোতাক্ষ নদের চর ইজারা নিয়েছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফোন বন্ধ করে রাখেন।
জানতে চাইলে যুবদল নেতা আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর বলেন, ‘আমার নাম করে কেউ অবৈধভাবে বালুবাণিজ্য করলে তার দায় আমি নেব না।’
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, সীমানা নিয়ে জটিলতার কারণে সেখানে চর ইজারা দেওয়া সম্ভব না। এরপরও কেউ ইজারা নেওয়ার কথা বলে বালুবাণিজ্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।