নিজস্ব প্রতিবেদক :: উজিরপুরে ভূমি কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ারের দূর্নীতি,অনিয়মের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন।
বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়ন সাবেক সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিপ্লব বল্লভ ও সার্ভেয়ার এনামূল হকের দূর্নীতি,অনিয়মের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী পরিবার।
২১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে উজিরপুর প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ের সভাকক্ষে ভুক্তভোগী ভূমি মালিক মোঃ আল মামুন মল্লিক সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আল আমিন মল্লিকের মাতা মোসাম্মৎ আলেয়া বেগম ও বোন জিন্নাত নেছা উর্মি,খালেদা আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী ভূমি মালিক লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন আমার পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি যাহা আমার দাদি সোনাবান বিবি নীজ নামে রেকর্ড সুত্রে ২ একর ১ শতাংশ এবং ২১১/১৯৫৭ সালের সোলেনামা ডিক্রি সুত্রে ৯৫ শতাংশ,মোট ২ একর ৯৬ শতাংশ জমি প্রাপ্ত হয়ে ভোগদখলে বিদ্যমান থাকিয়া বিগত ২৭/৭/১৯৮৬ইং তারিখের ২৪৬২নং দলিল মূলে আমার পিতা মৃত আঃ হালিম মল্লিক বরাবরে ২ একর ৩৪ শতাংশ জমি হস্তান্তর করেন।
উল্লেখ্য জমি আমার প্রতিপক্ষ দেলোয়ার হোসেন দুলাল মল্লিক তাহা অবগত না হইয়া আমার দাদিকে ভূল বুঝিয়ে বিগত ৩০/৭/১৯৮৬ ইং তারিখে অর্থাৎ আমার বাবাকে দেয়া দলিলের ৩দিন পরে দুলাল মল্লিক উল্লেখ্য ২ একর ৩৪ শতাংশ জমি লিখে নেন এবং পরবর্তীতে বাবাকে দেওয়া দলিল সম্পর্কে জানতে পারিলে আমার প্রতিপক্ষ দেলোয়ার হোসেন দুলাল মল্লিক মোকাম বরিশাল সাব জজ আদালতে আমার বাবার দলিলের বিরুদ্ধে ৬৮/১৯৮৭ নং মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে প্রতিপক্ষ নিজেই উক্ত মামলায় তাহার দলিল বেআইনি অকার্যকর মর্মে স্বীকার করে উক্ত মামলায় সোলে করেন এবং আমার বাবার দলিলে ২ একর ১৬ শতাংশ জমি ক্রয় ও এওয়াজ বন্টন করেন। তাহাতে আমার বাবার দেয়া দলিল বাদে আমার দাদির বাকি (২ একর ৯৬-২ একর ১৬)-৮০ শতাংশ এবং অন্য খতিয়ানে আরো কিছু অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ তাহার বাতিল হওয়া দলিল দিয়ে ৭২০(।) ১৯৮৬-৮৭নং নামজারী কেসে ২ একর ৩৪ শতাংশ এবং অন্য জমি ওয়ারিশ সুত্রে রেকর্ড করাইয়া নেন। যাহা জানতে পারিয়া আমি উজিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসে মিথ্যা ও ভূয়া নামজারীর বিরুদ্ধে ১৫১ উঃ২০২৩-২৪ ও ৩০উঃ২০২৪-২৫নং মিস কেস দায়ের করি।
উক্ত ২ টি মামলায় প্রতিপক্ষ দেলোয়ার হোসেন দুলাল মল্লিকের বিতর্কিত বিতর্কিত নামজারী বাতিল হয়ে যায়। আমি রায় প্রাপ্ত হই। পরবর্তীতে আমরা আমার দাদি ও পিতার প্রাপ্য সম্পত্তির নামজারীর আবেদন করলে আমার প্রতিপক্ষও একই সম্পত্তির পুনরায় নামজারীর আবেদন করেন। এছাড়া একই সম্পত্তির একাধিক আবেদন করলে উজিরপুর উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার ভূমি মাইনুল ইসলাম উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি গ্রহণ করার কিছু দিন পরেই হঠাৎ বদলী হলে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজা পুনরায় উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করেন।
পরে নির্বাহী কর্মকর্তা উভয় পক্ষের নামজারী স্থগিত করার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এনামূল হক ও শিকারপুর ইউনিয়ন সাবেক ভূমি কর্মকর্তা বিপ্লব বল্লভকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করে এনামুল হক ও বিপ্লব বল্লভ মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে আমার নামজারীর আবেদনটি খারিজ করে দেয় এবং আমার প্রতিপক্ষ দেলোয়ার হোসেন দুলাল মল্লিকের নামজারীর আবেদন এর কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিষয়টি জানতে ভূমি অফিসে গেলে আমাকে সার্ভেয়ার ও ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা বলেন উভয় পক্ষের নামজারী খারিজ করা হয়েছে।নতুন এসিল্যান্ড যোগদানের পর পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কিন্তুু বিগত ২৫/৮/২০২৫ তারিখে বিপ্লব বল্লভ বদলী হলে তিনি অনত্র যাওয়ার পূর্বে আমার প্রতিপক্ষের নামজারীর স্বপক্ষে প্রস্তাব জমা দিয়ে চলে যায়।
আমি গোপন সংবাদেের ভিত্তিতে জানতে পারি বিপ্লব বল্লভ ২ লক্ষ টাকা নিয়ে আমার প্রতিপক্ষের নামজারীর সমর্থনে প্রস্তাব পেশ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিক ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এনামূল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে বলেন নতুন এসিল্যান্ড যোগদান করার পরে সার্ভেয়ার এনামূল হক প্রতিপক্ষের নামজারী যাহা খারিজ হয়েছে বলে দুলাল মল্লিকের নামজারীর প্রস্তাব দিয়ে পূর্ণ অনুমোদনের জন্য এসিল্যান্ডের অনলাইন আইডিতে প্রেরণ করেন। যাহার কেস নং ১৩৯৩ (২০২৫-২৬)।
এরপর বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে অবহিত করি। এ বিষয়ে বিপ্লব বল্লভ ও এনামুল হককে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাইলে আমার কাছে বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার এনামুল হক ও শিকারপুর ইউনিয়ন সাবেক সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিপ্লব বল্লভের দূর্নীতি ও অনিয়মের বিচারের দাবিয়ে জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।