বিশেষ প্রতিবেদক :: বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন আজ কেবল পরিবেশের সংকট নয়, বরং মানুষের জীবন-জীবিকারও বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতে এগিয়ে এসেছেন এক তরুণ সংগঠক—আরিফুর রহমান শুভ। ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া তাঁর পথচলা আজ পৌঁছে গেছে দেশের ৫২ জেলায়। গড়ে উঠেছে একটি সক্রিয় নেটওয়ার্ক, যেখানে যুক্ত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার তরুণ। বর্তমানে তিনি ইয়ুথনেট গ্লোবাল-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শেখা শিক্ষার্থীদের পরিবেশ বিষয়ে আগ্রহী করতে শুভ চালু করেছেন একটি অভিনব আয়োজন—‘ইকো অলিম্পিয়াড’। এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে শিক্ষার্থীরা কুইজ ও প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জাস্ট ট্রানজিশান (ন্যায্য রূপান্তর) সম্পর্কে শিখছে। ঝালকাঠি জেলার ১০টি স্কুলে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তিন ধাপের বাছাই শেষে নির্বাচিত হয়েছে সেরা ২০০ জন যার মধ্যে সেরা ৬জন নির্বাচিত পেয়েন সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টেফিকেট এবং পুরুষ্কার। একই সময়ে বরিশাল জেলার ১০টি স্কুলেও চলছে এই আয়োজন, যেখানে ৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে অংশ নিয়েছে। নেতৃত্বের নতুন প্ল্যাটফর্ম:
ইকো অলিম্পিয়াড শেষ হয়েছে, তবে এর ফল থেমে নেই। এই উদ্যোগ থেকেই ঝালকাঠি জেলায় গঠিত হয়েছে প্রথমবারের মতো ‘ইয়ুথ ক্লাইমেট ক্লাব’।
পর্যায়ক্রমে জেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ক্লাব গড়ে তোলা হবে—যেখানে সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।
এই ক্লাব এখন শিক্ষার্থীদের হাতে দিয়েছে কার্যক্রম পরিচালনার নেতৃত্ব। বৃক্ষরোপণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান, প্লাস্টিক বর্জন প্রচার কিংবা জলবায়ু সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া—সব আয়োজন করছে তারাই। ফলে শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠছে পরিবেশ আন্দোলনের দূত। মাঠ থেকে নীতি পর্যন্ত আরিফুর রহমান শুভর কাজ কেবল সচেতনতা তৈরিতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপেও প্রভাব ফেলছে।
পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধকরণ: ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপ ও ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারে পলিথিন নিষিদ্ধ বাস্তবায়নে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে বরিশাল বিভাগে তার টিম প্রচারণা চালায়।
নদী রক্ষায় পদক্ষেপ: বরিশালের কীর্তনখোলা নদী রক্ষায় নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ, লঞ্চ মালিক ও সংশ্লিষ্টদের একত্রিত করেছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে: মানতা সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি হয়েছেন তাদের আস্থার প্রতীক।
শুভর ভাষায় স্বপ্ন: আরিফুর রহমান শুভ বলেন আমার স্বপ্ন তরুণদের হাতে সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা। ইকো অলিম্পিয়াড আর ইয়ুথ ক্লাইমেট ক্লাব সেই স্বপ্ন পূরণের এক ধাপ।” তাঁর লক্ষ্য শুধু পরিবেশ সচেতনতা নয়; বরং তরুণদের নেতৃত্ব ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলা। প্রশাসনের চোখে শুভ: পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন,
“আমার দেখা মতে তাঁর মতো পরিবেশপ্রেমী ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ বিরল। আমরা প্রতিটি পরিবেশ সংক্রান্ত কার্যক্রমে তাঁকে পাশে পেয়েছি। তাঁর ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনা করি।