প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ৩:৪৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ৯:৫৯ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল–৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী নিয়ে দ্বন্দ্ব : গ্রীন সিগন্যাল না রেড সিগন্যাল?
বরিশাল–৩ আসনকে ঘিরে বিএনপি শিবিরে যে আলোচনার ঝড় বইছে, তা মূলত দলীয় প্রার্থী নির্বাচনের প্রশ্নে অস্থিরতা ও বিভক্তিরই প্রতিফলন। একটি অনুমাননির্ভর সংবাদকে কেন্দ্র করে এখানে দুই ধরনের বাস্তবতা সামনে এসেছে— সমর্থকদের প্রত্যাশা বনাম দলীয় উচ্চপর্যায়ের নীরবতা।
জয়নুল আবেদীন বনাম সেলিমা রহমান
এই আসনে দুই প্রধান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তারা হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান।
জয়নুল আবেদীনের সমর্থকরা গণমাধ্যমের খবরে ভর করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, এমনকি তারা এটিকে আগাম বিজয়ের পূর্বাভাস হিসেবে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।
সেলিমা রহমানের সমর্থকরা তবে এই প্রচারণাকে তাচ্ছিল্য করে দেখছেন এবং এটিকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করছেন। তাদের বক্তব্য, এখনো কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গ্রীন সিগন্যালের রাজনীতি
বাংলাদেশের দলীয় রাজনীতিতে ‘গ্রীন সিগন্যাল’ শব্দবন্ধটি অনেক তাৎপর্য বহন করে। এটি প্রার্থীর জনপ্রিয়তা নয়, বরং দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক আশ্বাস বোঝায়। জয়নুল আবেদীনের অনুসারীরা গণমাধ্যমের রিপোর্টকেই গ্রীন সিগন্যাল হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন, কিন্তু সেলিমা রহমানের অনুসারীরা সেটিকে রেড সিগন্যাল বা ভ্রান্ত বার্তা হিসেবে প্রচার করছেন।
কেন্দ্রীয় অবস্থান ও বাস্তবতা
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এরই মধ্যে পরিষ্কার করেছে যে এখনো কাউকেই সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি। এর অর্থ হলো, মনোনয়ন প্রক্রিয়া এখনও প্রাথমিক ধাপে রয়েছে। বাস্তবে দেখা যায়, প্রার্থী নির্ধারণে বিএনপি সর্বদাই একাধিক বিষয় বিবেচনায় আনে—
➡️প্রার্থীর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও ত্যাগ
➡️স্থানীয় পর্যায়ে গণভিত্তি ও জনপ্রিয়তা
➡️নির্বাচনী এলাকায় সংগঠন ধরে রাখার ক্ষমতা
➡️কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দলীয় আনুগত্য ও প্রভাব
ভবিষ্যৎ প্রেক্ষাপট
বর্তমানে বরিশাল–৩ আসনের প্রার্থী নিয়ে গুঞ্জন যতই প্রবল হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এখানে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—
বিএনপি কি তরুণ ও নতুন মুখের প্রতি ঝুঁকবে?
নাকি অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত নেতৃত্বকে আবারও সামনে আনবে?
এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করবে শুধু ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার উপর নয়, বরং বিএনপির আগামী নির্বাচনী কৌশলের উপরও।
বরিশাল–৩ আসন এখন বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষুদ্র প্রতিচ্ছবি—যেখানে প্রত্যাশা, গুজব, উচ্ছ্বাস এবং হতাশা একসাথে কাজ করছে। সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যতই গ্রীন বা রেড সিগন্যাল নিয়ে তর্কে মেতে থাকুক না কেন, বাস্তব সংকেত আসবে কেবল কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের টেবিল থেকে।