নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে যুব সংলাপে জলবায়ু পরিবর্তন ও যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান।
সিরাক-বাংলাদেশ এর ‘ইয়ুথ ক্যাটালিস্ট’ প্রকল্পের আওতায় বরিশালে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে তরুণদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী বিভাগীয় যুব ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মশালায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও প্রান্তিক অঞ্চল থেকে ৩৫ জন তরুণ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ ও সুইডিশ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সিডার অর্থায়নে সারা দেশের বিভাগীয় শহরগুলো এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে "ইয়ুথ ক্যাটালিস্ট" প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ফোরামের মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাস্থ্য ও জলবায়ু-সংবেদনশীল অঞ্চলের তরুণদের মতামতের ভিত্তিতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় নীতিগত পরিবর্তনের জন্য একটি জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা।
উক্ত বরিশাল বিভাগীয় যুব ফোরামে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক , এবং সঞ্চালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশ এর উপপরিচালক (প্রোগ্রাম) মো: সেলিম মিয়া।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ডা: এস এম মঞ্জুর এলাহী, সিভিল সার্জন, বরিশাল; মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, পরিচালক, বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর; মেহবুব মোরশেদ, উপপরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, বরিশাল জেলা; মেহেরুন নাহার মুন্নি, উপপরিচালক, বিভাগীয় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, বরিশাল
সভাপতির বক্তব্যে বরিশাল বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন: সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ—যেমন National Strategy for Adolescent Health (2017–2030), গ্রামে পরিবার কল্যাণ সহকারীদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি সেবা প্রদান, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা (MNCH) কার্যক্রম এবং কিশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিশোর-কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় অভিভাবকদেরও সহায়ক ভূমিকা নিতে হবে এবং তরুণদের উচিত এই বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলাকে লজ্জা বা দ্বিধার বিষয় হিসেবে দেখা উচিত নয়। কারণ তারাই ভবিষ্যতের অভিভাবক।
সিরাক-বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস. এম. সৈকত বলেন: বরিশাল দেশের জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মানুষকে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীরা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে জটিলতায় পড়ছে।
কিন্তু বর্তমান অনেক নীতিমালায় এই বাস্তবতা যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। তাই আমরা সরকারের সঙ্গে মিলে একটি প্রমাণভিত্তিক জাতীয় নীতি তৈরি করতে চাই, যেখানে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার তরুণ-তরুণীদের অভিজ্ঞতা, প্রয়োজন ও মতামত গুরুত্ব পাবে।
উক্ত কর্মশালায় দলভিত্তিক আলোচনা পরিচালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম লিড শাহীনা ইয়াসমিন ও এডভোকেসি স্পেশালিষ্ট মিজানুর রহমান আকন্দ। আরও উপস্থিত ছিলেন ফাইন্যান্স কো-অর্ডিনেটর ওমর ফারুক খান এবং, পিএমইএল অফিসার রুহিয়াত তাসনীম এবং কমিউনিকেশন অফিসার এনামুল হক রনি।
তরুণ অংশগ্রহণকারীরা কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে মতামত প্রদান করেন, যার ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা প্রাসঙ্গিক নীতিগত সুপারিশ তুলে ধরেন। আশা করা হচ্ছে, এই সুপারিশসমূহ ভবিষ্যতে জাতীয় নীতিনির্ধারণে গুরুত্বসহকারে বিবেচিত হবে।