নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘অপসো স্যালাইন (ওএসএল) ফার্মা লিমিটেডের’ প্রায় পাঁচশ শ্রমিক-কর্মচারীকে একযোগে অপসারণ করা হয়েছে। তারা সবাই কোম্পানির স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টে কর্মরত ছিলেন।
বুধবার দুপুরে ডাকযোগে শ্রমিকদের কাছে অপসারণের নোটিশ পৌঁছে দেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। নোটিশ পাওয়ার পরপরই শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।
কোনো কারণ ছাড়াই একসঙ্গে এতো সংখ্যক শ্রমিককে ছাঁটাই করার প্রতিবাদে নগরীর ‘ওএসএল ফার্মা লিমিটেডের’ সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
এসময় শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে এ বিষয়ে শনিবার সিদ্ধান্ত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে শান্ত হন শ্রমিকরা।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, কোনো কারণ ছাড়াই তাদের চাকরি থেকে অপসারণের নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক ও এইচআর বিভাগের ইনচার্জ।
তারা বলেন, আমাদের পরিবার আছে, সংসার আছে। এতোগুলো পরিবারকে কোনো কারণ ছাড়া চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হলো। এখন এই পরিবারগুলো কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। সংসার কীভাবে চলবে। নোটিশ প্রত্যাহার করে শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে যোগদানের সুযোগ না দিলে পুরো কোম্পানি অচল করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের দেওয়া নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, “ওএসএল ফার্মা লিমিটেডের বগুড়া রোডে অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টে কর্মরত সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের অবহিত করা যাচ্ছে যে, কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টের উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।”
“এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ২৬(৩) ধারার বিধান অনুযায়ী আগামী ১ নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখ হতে স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টের সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি অবসান করা হলো।”
“একই সাথে বাংলাদেশ শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী অবসানকৃত শ্রমিক-কর্মচারীদের চূড়ান্ত পাওনা আগামী ২০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”
৪০০-৫০০শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, “আমাদের না জানিয়ে হঠাৎ করে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা কোথায় যাবো, আমাদের পরিবার কিভাবে চলবে? না খেয়ে মরতে হবে আমাদের।”
এই অন্যায় ও অমানবিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শত শত শ্রমিক তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানিতে পরিশ্রম করেও এখন বিনা কারণে চাকরি হারিয়ে তারা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী অপসোনিন কোম্পানির কর্তৃপক্ষ। তারা দ্রুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।