 
     নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিএম কলেজে তরুণ-তরুণীকে হেনস্থা, উগ্র অনলাইন গ্রুপের ১০ সদস্য পুলিশ হেফাজতে।
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিএম কলেজে তরুণ-তরুণীকে হেনস্থা, উগ্র অনলাইন গ্রুপের ১০ সদস্য পুলিশ হেফাজতে।
বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে যুগলের ওপর চড়াও হয়ে তাদের ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেন একদল তরুণ। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা নিয়ে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের মারামারি হয়। পরে ১০ জনকে আটক করে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা।
পুলিশ ও কলেজ প্রশাসন জানিয়েছে, যুগলের ওপর চড়াও হওয়া তরুণেরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ‘টিম প্রটেক্ট আওয়ার সিস্টার্স’ নামক একটি উগ্র অনলাইন গ্রুপের সদস্য। তারা নারীদের রক্ষার নামে বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা করে আসছেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- বিএম কলেজের মীর বাহার মিয়া ও তাকরিম হোসেন, ইনফ্রা পলিটেকনিকের মো. ফজলুল হক আকিব, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মো. রাব্বি, বেলতলা দারুল উলুম মাদ্রাসার ইনাম আহমেদ, নগরের কাশিপুরের মো. মাহমুদ মোস্তফা, রূপাতলী এলাকার মো. রাফি, মুসলিমপাড়ার নাসিম মাহমুদ এবং লুৎফুর রহমান সড়কের কাজী মিরাজ এবং মো. তাওহিদ।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, ক্যাম্পাসের পরীক্ষা ভবনের কাছাকাছি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী দুটি ছেলে-মেয়ে বসেছিলেন। ছেলেটি হাতেম আলী কলেজের এবং মেয়েটি বিএম কলেজের। কলেজের এক ছেলে তাদের প্রত্যক্ষ করে বহিরাগত সহযোগীদের ডেকে আনেন। সেখানে তরুণ-তরুণীকে ভিডিও করাসহ হাতেম আলী কলেজের ছেলেটিকে মারধর করা হয়। বিষয়টি টের পেয়ে বিএম কলেজছাত্ররা বহিরাগত কয়েকজনকে ধরে উপাধ্যক্ষ ড. আবু তাহের মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামের কার্যালয়ে নিয়ে যান।
উপাধ্যক্ষ সাংবাদিকদের জানান, এই ছেলেরা ‘টিম প্রটেক্ট আওয়ার সিস্টার্স’ নামক একটি উগ্র অনলাইন গ্রুপের সদস্য। তারা কলেজে আটকা পড়েছেন এমন খবর ছড়িয়ে দিলে বেশকিছু যুবক দলে দলে কলেজ গেটের সামনে হাজির হয়। একপর্যায়ে বিএম কলেজে শিক্ষার্থীরা তাদের মধ্যে ১০ জনকে ধরে পুলিশে খবর দেন। তারা শহরের টেক্সটাইল কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ, বিএম কলেজ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাহমুদিয়া মাদ্রাসাছাত্র। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের ১১টি মোবাইলসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের কোনো খারাপ উদ্দেশ আছে কি না তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তরুণেরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তাদের গ্রুপের প্রধান একজন মালয়েশিয়াপ্রবাসী।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি/তদন্ত) সুমন আইচ। বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টার দিকে এই রিপোর্ট লেখার প্রাক্কালে পুলিশ কর্মকর্তা বরিশালটাইমসকে জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন। তবে তরুণেরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তাদের গ্রুপের প্রধান একজন মালয়েশিয়াপ্রবাসী।
কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বিএম কলেজছাত্ররা ১০ জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। তাদের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে আটকদের কোনো খারাপ উদ্দেশ আছে কি না। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানান ওসি।’