ভারতের তিনটি রাজ্যে গতকাল শুক্রবার থেকে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছেন ইনকাম ট্যাক্স কর্মকর্তারা। এই অভিযানে গেলো ২৪ ঘণ্টায় নগদ ২৯০ কোটি রুপি উদ্ধার করা হয়েছে। যা দেশটির ইতিহাসে বৃহত্তম অর্থ উদ্ধার অভিযান।
বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের কাছে বিস্ফোরণ
সূত্র বলছে, শনিবার সকালেও বস্তা বস্তা টাকা উদ্ধার করা হয়েছে কংগ্রেস সাংসদের বাড়ি থেকে। বান্টি সাহু নামে সাংসদের এক ঘনিষ্ঠ সহকারীর বাড়ি থেকেও এখনও অবধি ২০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। আগে উদ্ধার হওয়া আরও ৯ বস্তা টাকা গোনাও এখনো বাকি।
আয়কর কর্মকর্তারা বলছে, উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ এতটাই বেশি যে তাদের আনা টাকা গোনার মেশিনও বিকল হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেশী রাজ্য থেকে টাকা গোনার মেশিন জোগাড়ের চেষ্টা করছে আয়কর দপ্তর। আপাতত স্থানীয় ব্যাংকগুলি থেকে মেশিন এনে চলছে রুপি গোনার কাজ। ধারণা করা হচ্ছে উদ্ধার হওয়া নগদ অর্থের পরিমাণ ৪০০ কোটি রুপি ছাড়াতে পারে।
এদিকে আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) আবারও সংসদের ঝাড়খণ্ডের বোকারো ও রাঁচিতে এবং ওড়িশার সম্বলপুর ও সুন্দরগরের বাড়ি ও অফিসে নতুন করে তল্লাশি শুরু করেছে আয়কর দপ্তর। সূত্রের খবর সেখানেও উদ্ধার হয়েছে বিপুল অর্থ।
কর্মকর্তারা জানিয়েছে, এখনও আরও তিনটি জায়গার সাতটি ঘর ও নয়টি লকার চেক করা হয়নি। সেখান থেকে টাকা উদ্ধার হতে পারে বলে অনুমান করছে আয়কর দপ্তর। শুধু টাকা নয় গহনাও উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আয়কর দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওড়িশার একটি মদ প্রস্তুতকারক সংস্থা ও তার সঙ্গে যুক্ত নানা দোকানে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির সূত্র ধরেই এই অভিযান চালানো হয়। ঝাড়খণ্ডের সাংসদ ধীরজ সাহু এই দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ। আয়কর দপ্তর জানায় দীর্ঘ এই অভিযান চলাকালীন সাংসদ ও তার অফিস কর্মীরা টাকার উৎস জানাতে পারেননি। ওই টাকার জন্য সাংসদ আয়কর জমা দেননি। উৎস উল্লেখ না করায় সরকারিভাবে ওই অর্থ কালো টাকা হিসাবে গণ্য হবে।
পেশায় শিল্পপতি ধীরাজ বৌধ ডিস্টিলারিজ নামক একটি সংস্থা ও তার শাখা সংগঠন বলদেব সাহু ইনফ্রা প্রাইভেট লিমিটেড সহ একাধিক কোম্পানির ডিরেক্টর। এই কোম্পানির আর্থিক বেনিয়মের সূত্র ধরেই আয়কর আধিকারিকরা অভিযান চালায়। সেখানেই ধীরজ সাহুর নাম উঠে আসে।
পারিবারিক ভাবে কংগ্রেসী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ধুরাজ ১৯৭৭ সালে সরাসরি কংগ্রেসী রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০১০ সাল থেকে ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ পদে রয়েছেন ধীরজ সাহু।
এদিকে টাকা উদ্ধারের কথা জানার পরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি লেখেন,, “দেশবাসীর এই টাকার বান্ডিল দেখা উচিত এবং এই নেতাদের সত্য ভাষণ শোনা উচিত। জনগণের কাছ থেকে যা কিছু লুট করা হয়েছে, প্রত্যেকটা পয়সা ফেরত আসবে। এটাই মোদীর গ্যারান্টি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরও বলেন, এই কারণেই সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী নোটবন্দির বিরুদ্ধে বলেন। এখনও টাকা গোনা চলছে, এদিকে টাকা গোনার মেশিন বিকল হয়ে যাচ্ছে। আধিকারিকরা ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছেন। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে টাকা ভরতে ব্যাগ কম পড়ে যাচ্ছে, কিন্তু টাকার বান্ডিল শেষ হচ্ছে না। কংগ্রেস, দুর্নীতি ও ক্যাশ-সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, কংগ্রেসকে বলতেই হবে যে এই কংগ্রেস সাংসদ কার এটিএম? মহব্বত কি দুকানে কীভাবে দুর্নীতি চলছে?”।
সূত্র: এনডিটিভি