ঢাকারবিবার , ২ নভেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালে প্রকৌশলী শহিদুলের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ : ৩৫ লাখ টাকায় হাওয়া!

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
নভেম্বর ২, ২০২৫ ৭:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে প্রকৌশলী শহিদুলের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ : অগ্রিম কমিশনের ৩৫ লাখ টাকায় হাওয়া!

 

বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুলের অনিয়মই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে। দুর্নীতি-অনিয়ম কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না এখানে। দপ্তরটিকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদের গদি বানিয়ে ফেলেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে টেন্ডার, বিল,কোথায় নেই তার কমিশনের হাতছানি! এমনটি অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

বরিশালে যোগদানের পর থেকেই সে এভাবেই দূর্নীতির দূর্গ গড়েছেন। তার দূর্নীতির দূর্গ সচল রাখতে তিনি ঢাকাস্থ সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আলতাফ হোসেনকে প্রতি সপ্তাহে ইলিশের ঝুড়ি পাঠাতেন। এরফলে তিনি কোন নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি, সমঝোতার নামে নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা অনৈতিক সুবিধা আদায় করছেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টায়
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের প্রকৌশলী মকিতুল ইসলামের সাথে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বরিশাল সার্কিট হাউজে অবস্থান করতেছিলেন। এমন সময় নির্বাহী প্রকৌশলীর কমিশনের অগ্রিম ৩৫ লক্ষ টাকা তার দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর রাশেদের নিকট জমা দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের প্রতিনিধি।

 

কম্পিউটার অপারেটর রাশেদ সমুদয় টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান, শুরু হয় তুলকালাম কান্ড। সকলের নিকট সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের কমিশন দূর্নীতি।

জানা যায়, কয়েকজন ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম কাজ পাইয়ে দেওয়া, বিল ও জামানতের চেক পরিশোধের ক্ষেত্রে গুনে গুনে বুঝে নেন কমিশন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, বরিশালের বাবুগঞ্জ, আগৈলঝাড়া, মেহেন্দিগঞ্জ ও মুলাদীতে কারিগরি স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপনের কাজের বাবুগঞ্জ ও আগৈলঝাড়ার কারিগরি স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপনের দুইটি কাজ তিনি বসুন্ধরা হাউজিং (প্রাঃ) লিঃ নামক ঠিকাদারী লাইসেন্সের মাধ্যমে নিজে ভাগিয়ে নেন। পরবর্তীতে ২৬ কোটি টাকার কাজ দুইটি ৭% কমিশনে বিক্রি করে দেন। অবশ্য তিনি বরিশালে যোগদানের পর থেকেই অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন এবং বাছাই করা উন্নয়ন কাজগুলো নিজেই বিভিন্ন কৌশলে ভাগিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দিয়ে আসছেন।

৩৫ লক্ষ টাকা কেনো রাশেদুলের কাছে দেয়া হয়েছে বা কেনোই বা প্রকৌশলীর একাউন্টে জমা দিবে? এমন প্রশ্ন ঘোর পাক খাচ্ছে নগরী জুড়ে।

তবে এবিষয় শিক্ষা প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল কে একাধিকবার তার ফোনে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করে নি। এছাড়াও তার ওয়াসআপ নাম্বারে অভিযোগের বিষয় জানালে ও সত্যতা জানতে চাইলেও তিনি কোন মতামত দেয় নি।

 

জানা যায়, ২০২৪ সালে সদ্য অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিমূলক সভায়ও দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। তখন সভার নামে আসলে চলেছে টেন্ডার ভাগাভাগি আর কমিশন নির্ধারণের মহড়া। কাগজে-কলমে সভার এজেন্ডা বঙ্গবন্ধু, শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী আর শোক দিবস। কিন্তু ভেতরে? সবাই ব্যস্ত ছিলেন “কে কতটা শেয়ার পাবে” সেই অঙ্ক কষায়! স্থানীয়রা বলছেন, শিক্ষার নামে বরিশালে চলছে “দুর্নীতির ইঞ্জিনিয়ারিং”।

 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্ররা বই-খাতা না পেয়ে হাহাকার করছে, কিন্তু শহিদুলের কার্যালয়ে কেবল বিলাসী আসবাব আর কাগজে কোটি কোটি টাকার কাজের হিসাব। প্রশ্ন উঠেছে,শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কি উন্নয়ন করছে, নাকি শহিদুল সাহেবের ব্যাংক ব্যালান্স উন্নয়ন করছে?