
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীর রুপাতলী এলাকার অস্ট্রিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তিকে অপহরণ, মারধর ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই মোঃ সাইদুল ইসলাম থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন। এজাহারে বাদী জানান, তাঁর ছোট ভাই মোঃ মুরাদুল ইসলাম (৩০) অস্ট্রিয়া প্রবাসী। তিনি গত ৫ নভেম্বর ছুটিতে দেশে আসেন। এর আগে, বাদী সাইদুল ইসলাম তাঁর ভাই মুরাদুলের পক্ষ থেকে বন্ধুত্বের প্রায় ১৪ বছরে সম্পর্কের জের ধরে প্রতারণায় বাউফলের সুর্যমনি ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা আসামী মোঃ বশির উদ্দিনের (৩০) বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে একটি মামলা করেন।
বাদীর দাবি- সেই মামলা দায়েরের পর থেকে বশির উদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর ভাই মুরাদুল ইসলামকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার দিন বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে পুর্ব-পরিচিত আসামী মোঃ রিয়াদ (২৩) ফোনে মুরাদুল ইসলামকে দেখা করার কথা বলে রুপাতলী সোনারগাঁও টেক্সটাইলের সামনে ডেকে নেয়। সকাল ১০টার দিকে মুরাদুল সেখানে পৌঁছালে রিয়াদ তাকে নিয়ে যায় শাওন পাম্পের বিপরীতে চৌধুরী ভিলা নামক একটি টিনসেড ভবনে, যেখানে আগে থেকেই অন্যান্য আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উপস্থিত রিয়াদ, সুমন, লোকমান, সজল, রেজাউল, মাহি ও আরও ২-৩ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে প্রবাসী মুরাদুলকে হত্যার ভয় দেখিয়ে মাথা, বুক, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি মারধর করে।
বাদী সাইদুল এজাহারে আরও জানান, আসামিরা এক পর্যায়ে একজন অজ্ঞাত প্রতিবন্ধী ছেলেকে এনে মুরাদুলকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টা করে এবং ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। তারা ওই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় মুরাদুলের সঙ্গে থাকা ২৫ হাজার টাকা নগদ, একটি ডায়মন্ড রিং ও একটি রুপার ব্রেসলেট (মোট আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা) ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে মুক্তিপণের অর্থ আদায়ের জন্য তারা পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে ০১৭৩৩-২৪০১১২ নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয়। প্রাণের ভয়ে বাদীর শ্যালক মোঃ রানা ওই নম্বরে ৫ হাজার টাকা প্রেরণ করেন। তারপরও আসামিরা মুরাদুলকে অবরুদ্ধ অবস্থায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্যাতন চালায়। পরে তারা মুরাদুলকে সঙ্গে নিয়ে চাঁদার টাকা নিতে তার বাড়িতে আসে। তখন ৩ ও ৪নং আসামী (সুমন ও লোকমান) রিকশায় করে বাসায় গেলে, স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বাদী লোকমানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন, তবে সুমন পালিয়ে যায়।
এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জেনে আসামী লোকমানকে থানায় নিয়ে যায়। বাদী সাইদুল ইসলাম আরও জানান, আমার ভাই অস্ট্রিয়া প্রবাসী। টাকা আত্মসাতের মামলার প্রতিশোধ নিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা আইনের যথাযথ বিচার চাই। এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজন আসামীকে আটক করা হয়েছে, বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


