নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঝালকাঠি জেলা থেকে যাত্রা শুরু হওয়া ইকো অলিম্পিয়াড ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগের পাশাপাশি সারা দেশে জলবায়ু শিক্ষা বিস্তারের এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে পরিণত হয়েছে। বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলায় সফলভাবে আয়োজিত এই অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও অভিযোজন সম্পর্কে বিস্তৃত ধারণা অর্জন করেছে। অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত প্রতিটি স্কুলে গঠন করা হয়েছে ইয়ুথ ক্লাইমেট ক্লাব, যেখানে ৩০ জন শিক্ষার্থী এবং দুইজন শিক্ষক উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করছেন। এসব ক্লাব শিক্ষার্থীদের স্কুল পর্যায়ে পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা, সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে সচেতনতা, সবুজায়ন এবং জলবায়ু অভিযোজন কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করছে। বরিশাল বিভাগে ইকো অলিম্পিয়াড বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ। পুরো উদ্যোগটি পরিচালনা করছে ইয়ুথনেট গ্লোবাল, যারা এটিকে দেশের সবচেয়ে বড় জলবায়ু শিক্ষা প্ল্যাটফর্মে রূপ দিতে কাজ করছে। ইতোমধ্যে ইকো অলিম্পিয়াডের কার্যক্রম সিলেট, কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রাম, ঢাকা,বান্দরবান সহ বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হচ্ছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে দেশের ৬৪ জেলাতেই ইকো অলিম্পিয়াডের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে, যা বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে জলবায়ু শিক্ষাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী মো. সোহানুর রহমান বলেন, ইকো অলিম্পিয়াড আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষামূলক বিনিয়োগ। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা একটি দেশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি অপরিহার্য। আমরা চাই ৬৪ জেলার প্রতিটি শিশু পরিবেশ রক্ষার দূত হিসেবে গড়ে উঠুক। ইয়ুথনেট গ্লোবালের সাধারণ সম্পাদক মো: আরিফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু নেতৃত্বে প্রস্তুত করতে হলে এখন থেকেই তাদের হাতে সঠিক শিক্ষা তুলে দিতে হবে। ইকো অলিম্পিয়াড শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়; এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা এবং নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করছে। আমরা চাই দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজের ভূমিকা বুঝতে শিখুক। এই উদ্যোগকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে আমরা সরকার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। ইয়ুথনেট গ্লোবাল ঝালকাঠি জেলা সমন্বয়কারী সাজিদ মাহমুদ বলেন, ইকো অলিম্পিয়াডের যাত্রা ঝালকাঠি থেকে শুরু হওয়ায় আমরা গর্বিত। এখানকার শিক্ষার্থীরা যে উৎসাহ ও অংশগ্রহণ দেখিয়েছে, তা আমাদের সারা দেশে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দিতে আরও অনুপ্রাণিত করেছে। ইকো অলিম্পিয়াডের এই দ্রুত বিস্তৃতি বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু শিক্ষা আন্দোলনে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে বলে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা।