রিপোর্টার, পারভেজ :: স্কুলের বাইরের কিশোরী এবং যুবতী নারীদের বাজারের সাথে ক্ষমতায়ন করা, পেশাগত দক্ষতা, স্থানান্তরযোগ্য দক্ষতা এবং চাকুরির নিশ্চয়তা প্রদান করার বিষয়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় এবং ইকো-সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ( ইএসডিও) এর আয়োজনে বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে সেইন্ট বাংলাদেশ হল রুমে ইএসডিও-এএলপি প্রজেক্ট'র বরিশাল জেলার এ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার, মোঃ মানিক মিয়ার শুভেচ্ছা বক্তব্য ও উপস্থাপনায় অংশীজনদের সাথে পরামর্শ মূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বরিশাল, লুসিকান্ত হাজং। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, এ কে এম আখতারুজ্জামান তালুকদার ( মামুন) উপ- পরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর, মেহেরুন নাহার মুন্নি , উপ-পরিচালক মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর, মোঃ সাহাবুদ্দিন সরদার, উপ পরিচালক,যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বরিশাল তথ্য অফিসের, সহকারী জেলা তথ্য অফিসার, মৃদুল চৌধুরী কনক সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এসময় প্রজেক্টের অগ্রগতি ও সার্বিক বিষয় সম্পর্কে এ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার, মোঃ মানিক মিয়া বলেন, আমরা ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ESDO) কে প্রতিনিধিত্ব করি। ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ESDO) জীবিকা, দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। যেমন পানি ও স্যানিটেশন, পুষ্টি, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ, টিকাদান, আর্সেনিক প্রশমন এবং বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের চাহিদাকে গুরত্ব দিয়ে ১৯৮৮ সালের সূচনালগ্ন থেকে ESDO এর লক্ষ্য "আমরা সকল বৈষম্যমুক্ত একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ চাই"।
আমরা ইউনিসেফের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তেতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া সবচেয়ে প্রান্তিক কিশোরী মেয়ে এবং যুবতী মহিলাদের (১৫-২৪ বছর) চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলি চিহ্নিত করে, বাজারের সুযোগ, চাহিদা, পরিষেবা প্রদানকারী বা দক্ষতার সুযোগ অন্বেষণ করে দেশের চলমান ৪টি নির্বাচিত জেলা ভোলা, বরিশাল, বাগেরহাট,ও গাজীপুর জেলায় অল্টারনেটিভ লার্নিং প্রোগ্রাম (এএলপি) এর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া, দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত কিশোরী ও যুবতী (১৫-২৪ বছর) মেয়েদের দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি।
উপরন্তু, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে কিশোরী মেয়ে এবং যুবতী মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থান বা বিকল্প শিক্ষার সুযোগ তৈরি করতে বিকল্প শিক্ষার পথ অনুসন্ধান করা। আমাদের প্রকল্পের উদ্দেশ্য শিরোনাম ""Empowering out of School Adolescent Girls and Young Women with Market Driven Occupational Skills, Transferable Skills and Job Placement".
এই প্রকল্পের আওতায় কিশোরী ও যুবতী মেয়েদের দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থানের চুড়ান্ত লক্ষ্য নিশ্চিতকরণের জন্য ইএসডিও-এএলপি- ইউনিসেফ প্রোগ্রাম, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়া, দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত বেকার যুব নারীদের বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়ণমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান করবে, যাতে দরিদ্র ও অতিদরিদ্র পরিবারের এসব নারীদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা নির্দিষ্ট সময় পরপর চাকুরী মেলার আয়োজন করে থাকি। যেখানে তারা তাদের দক্ষতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে একটা চাকুরির ব্যবস্থা করে দিতে পারি। এই (ALP) প্রোগ্রামে শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং কেন্দ্র ভিত্তিক প্রশিক্ষণ নামে তিন মডেলে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
বর্তমান এ প্রকল্পের অধীনে তিনটি মডেলের ট্রেনিং চলমান । এগুলো হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষানবিশ, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং সেন্টার বেইজ প্রশিক্ষণ । বর্তমানে বরিশালে ১৮৮৫ জন অনানুষ্ঠানিক শিক্ষানবিশ, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং সেন্টার বেইজ প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত আছে । যার মধ্য থেকে ১৭৬০ জন প্রশিক্ষণ শেষ করেছে । প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উপকারভোগীদের মধ্যে ১৪১৪ জন বিভিন্ন ট্রেডে জব প্লেসমেন্টে আছে ।
এসময় কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপকারভোগী, অভিভাবকবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ, চাকুরীদাতা, সমাজসেবক/সেবিকা, শিক্ষক প্রতিনিধিবৃন্দ, ইএসডিও-এএলপি প্রজেক্টর কর্মকর্তাবৃন্দ।