মুহাম্মাদ আল-আমিন সিকদার :: আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ঐতিহাসিক চরমোনাই মাদরাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী অগ্রহায়ণ মাহফিল শেষ হতে যাচ্ছে। আখেরি মোনাজাতে সারা বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য নিরাপত্তা ও পুরো মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করা হয়।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে সমাপনী অধিবেশন ও আখেরি মোনাজাতে অংশ নেবেন লাখো লাখো মুসল্লি।
এর আগে গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) বাদ জোহর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই)-এর উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়।
চরমোনাই মাহফিলে কুরআনের পাখিদের উপস্থিতিতে মানব সাগরে ভরে উঠেছে ময়দান
চরমোনাই মাহফিল মানেই পবিত্রতার আবহ, রহমতের সুবাস আর লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগম।
প্রতি বছরের মতো এবারও চরমোনাই মাঠজুড়ে চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি ছিলো কুরআনের পাখিদের — যাদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ছিলো আল্লাহর বাণীর মধুর সুর।
সেই সুরে যেনো পুরো মাঠ ভরে উঠেছিলো বরকত, শান্তি আর অনাবিল প্রশান্তিতে।
ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা জানান, কুরআনের তিলাওয়াত ও আলোচনা শুনতে তারা দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন।
দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিদেশ থেকেও অসংখ্য মানুষ অংশ নেন এই মাহফিলে। প্রতিবছর অনুষ্ঠিত দুইটি বড় মাহফিলকে কেন্দ্র করে চরমোনাই যেনো পরিণত হয় এক বিশাল আধ্যাত্মিক সমাবেশে—যা বাংলাদেশে রেকর্ডসৃষ্টিকারী উপস্থিতির জন্যও বিশেষভাবে পরিচিত।
মাহফিল ময়দানে আল্লাহর রহমতের স্রোত বইছে—এমনটাই অনুভব করেছেন উপস্থিত সব বয়সের মুসল্লিরা।
রাতভর ওয়াজ, দোয়া, তিলাওয়াত ও যিকিরে মুখরিত থাকে চারপাশ। ইসলামের মধুর আহ্বান সংগ্রহ করতে যেনো সাগর পাড়ি দিয়ে আসে মানুষ, সত্যিকার অর্থেই ‘কুরআনের মধু প্রেমিক’ হয়ে।
চরমোনাই পীর সাহেবের দাওয়াত, তরিকা ও আদর্শের প্রতীক হিসেবেই পরিচিত হাত পাখা মার্কা।
যা অনুসারীদের কাছে আস্থা, ঐক্য ও ইসলামী মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
চরমোনাই মাহফিল শুধু একটি ধর্মীয় আয়োজন নয়—বরং হাজারো মানুষের হৃদয়ে আধ্যাত্মিক শান্তি ছড়িয়ে দেওয়া এক আলোকময় সম্মেলন;
যেখানে মানুষের হৃদয় পরিশুদ্ধ হয়, মিলন ঘটে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে, আর তিলাওয়াতের সুরে প্রতিধ্বনিত হয় আল্লাহর মহান বাণী।