ঢাকাসোমবার , ১ ডিসেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাকেরগঞ্জ ও নলছিটি দুই উপজেলার সংযোগ সেতু এখন মরণফাঁদ! হাজারো মানুষের ভোগান্তি

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ১১:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও নলছিটি—এই দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বিষখালী নদীর শাখা খালের উপর নির্মিত সেতুটি বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ও নলছিটি সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন হয়ে দুই উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। তবে দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতে গুরুত্বপূর্ণ এই সংযোগ সেতুটি এখন পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। দীর্ঘ এক যুগ ধরে সেতুটিতে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। এতে ভোগান্তির শেষ নেই দুই উপজেলার হাজারো মানুষের।

 

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে বাকেরগঞ্জ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুটি নির্মাণের কয়েক বছর পরই ফাটল ধরে এবং ধীরে ধীরে ভাঙন দেখা দেয়। রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাব এবং নির্মাণ ত্রুটির কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি দিয়ে পারাপারের সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই আছে।

 

 

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থের নড়বড়ে সেতুর সিমেন্টের ঢালাই করা স্লিপারগুলো ভেঙে খালে পড়ে গেছে। ক্রস অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে ভেঙে গিয়ে সেতুটি অনেক আগেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সিমেন্টের স্লিপার না থাকায় স্থানীয়রা লোহার অ্যাঙ্গেলগুলোর সঙ্গে বাঁশ ও গাছ বেঁধে অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে। স্লিপার না থাকায় সেতুটির উপরের অংশ পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে গেছে। ক্রস অ্যাঙ্গেলের বিভিন্ন অংশ মরিচা ধরে ভেঙে গেছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে।

 

 

 

নলছিটি উপজেলার রাজনগর হাফিজি মাদ্রাসার হাফেজ মাওলানা মনিরুল ইসলাম বলেন, সেতুর ওপর তৈরি গাছের সাঁকো দিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। “সেতুটি সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের জন্য বারবার দাবি জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেনি কর্তৃপক্ষ,” বলেন তিনি।

 

 

স্থানীয় কৃষক মো. দেলোয়ার খান বলেন, আমাদের বাড়ি নলছিটি উপজেলায় হলেও অনেকেরই কৃষিজমি সেতুর অপর প্রান্তে বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে। “প্রতি বছর আমরা সেখানে কৃষিকাজ করি। উৎপাদিত পণ্য কাঁধে ও মাথায় করে সাঁকো দিয়ে পার হতে হয়। কারণ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কোনো যানবাহন চলে না,” বলেন তিনি।

 

বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের নন্দপাড়া গ্রামের সোহেল হাওলাদার বলেন, হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই উপজেলার মানুষ এই সেতু দিয়েই যাতায়াত করে। “এলাকার জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সেতুটি মেরামত বা পুনর্নির্মাণ জরুরি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতার কারণে সাধারণ মানুষের জীবন এখন ঝুঁকির মুখে,” বলেন তিনি।

 

বাকেরগঞ্জ উপজেলার এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসনাইন আহমেদ বলেন, “ভাঙা সেতুটির স্থান পরিদর্শন করে যেকোনো একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।”