
আপনি কি? স্কুটি শিখতে চাচ্ছেন আজই যোগাযোগ করুন ‘ফ্রিডম লেডি স্কুটি ট্রেনিং সেন্টারে’ মোবা: ০১৭৫২৮৩৯১৫৪
এক দশক আগেও বরিশাল নগরীর রাস্তায় নারীদের স্কুটি বা মোটরসাইকেল চালিয়ে চলাচলের দৃশ্য ছিল প্রায় অচেনা। তবে সময়ের পরিক্রমায় সে দৃশ্য এখন বদলে গেছে। আজ নগরের বিভিন্ন সড়কে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে স্কুটি চালিয়ে চলছেন শত শত নারী। আর এ পরিবর্তনের মূল নায়িকা নাজমা রহমান।
বরিশাল নগরীর মেয়ে নাজমা রহমানই প্রথম সাহস করে নারীদের স্কুটি ও মোটরসাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেন। বিগত ৮ বছরে তিনি ৩-৪ হাজারেরও বেশি নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। নারীদের আরও স্বাবলম্বী করতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ফ্রিডম লেডি স্কুটি বাইক ট্রেনিং সেন্টার, যেখানে তাঁর সঙ্গে আরও এক তরুণী নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন।
শুরুর দিনগুলো স্মরণ করে নাজমা রহমান বলেন, “বরিশালের অনেক নারী আমাকে জিজ্ঞেস করতেন, কোথায় স্কুটি শিখেছি। তাঁদের আগ্রহই আমাকে উদ্বুদ্ধ করে নারীদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে।”
বর্তমানে তিনি প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। জনপ্রতি প্রশিক্ষণ ফি ৩ হাজার টাকা। শুধু বরিশাল শহর নয়—পাশের জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকেও নারীরা আসছেন তাঁর কাছে স্কুটি চালানো শিখতে।
নাজমার প্রশিক্ষণে বদলে গেছে অনেক নারীর জীবন।
সুমাইয়া সুলতানা, এখন নিজেই প্রশিক্ষক, বলেন—
“নাজমা আপুর কাছ থেকে স্কুটি শিখে এখন অন্যদের শেখাচ্ছি। মাসে ভালো আয় হচ্ছে। নারীরা স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারছে—এটাই বড় আনন্দ।”
সদর রোড এলাকার বাসিন্দা ফারিহা ইসলাম জানান—
“স্কুটি শিখে এখন নিজের সব কাজ নিজেই করি। বাচ্চাকে স্কুলে নেওয়া-আনা থেকে অফিসের কাজ—সবই সহজ হয়ে গেছে। অন্য যানবাহনে পুরুষদের ভিড়ে বসতে হয় না।”
পুলিশ লাইন এলাকার ভাবিয়া বলেন—
“নাজমা আপুর উদ্যোগে বরিশালে এখন অনেক মেয়েকে স্কুটি চালাতে দেখা যায়। নতুন প্রজন্মের মেয়েদের চলার পথ আরও সহজ ও নিরাপদ হয়েছে।”
নারীদের চলাচল, নিরাপত্তা ও স্বাবলম্বিতার পথে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন নাজমা রহমান। তাঁর হাতে গড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আজ বরিশালের নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। স্কুটি চালানো শুধু পরিবহন নয়—এটি এখন নারীদের স্বাধীনতার প্রতীক, আর সে পথে আলো জ্বালিয়ে যাচ্ছেন নাজমা রহমান।