নাজমুল হক মুন্না :: বরিশালের উজিরপুর মডেল থানার ওসির চেষ্টায় এক যুগ পর নিজের পরিবারের কাছে ফিরেছে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। শুক্রবার দুপুরে পরিবারের কাছে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা ব্যক্তিকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি মো. জাফর আহমেদ।
ওই ব্যক্তি হলেন-সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া গ্রামের মৃত ফয়জুর রহমানের ছেলে আলম নুর (৪৬)।
ওসি জাফর আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর রাত পৌন চারটার দিকে উপজেলার সাতলা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে ছিলো আলম নুর। বিষয়টি তাকে জানানো হলের পুলিশের একটি দল ওই গ্রামে পাঠিয়ে আলম নুরকে থানায় আনা হয়। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেনি। ঠিকমতো নামও বলতে পারেনি। তার ভাষা সিলেট অঞ্চলের এবং ছাতক নাম বলে। তখন ছাতক থানায় ছবিসহ সন্ধান চেয়ে বার্তা পাঠানো হয়।
ওসি বলেন, থানা তার পরিচয় শনাক্ত করে স্বজনদের খবর দেয়। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে আলম নুরের চাচাত ভাই মো. এখলাছ, মো. আজাদ, ভগ্নিপতি মো. ফজলুর রহমান, ভাগিনা মো. আবুল হাসান ও ভাতিজা মো. হাবিবুর রহমান থানায় আসেন।
ওসি জানান, আলম নুরের একমাত্র কন্যা দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রী সনিয়া আক্তার ভিডিও কলের মাধ্যমে তার বাবার সাথে কথা বলেছে। দীর্ঘ ১২ বছর পর বাবাকে দেখতে পেয়ে আবেগ আপ্লুত সনিয়া কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
সনিয়ার বরাতে ওসি জানান, আট বছর বয়সের সময় তার বাবা হারিয়ে যায়। তার মা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়ার কাজ করে। তার বাবা গৃহস্থলীর কাজ করতো। ১২ বছর পূর্বে হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে লাপাত্তা হয়।
ওসি আরো জানান, আলম নুরের পরিচয় পেয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সেবা দেয়া হয়েছে। তাকে থানার কনষ্টেবল ইলিয়াস গোসল করিয়ে সেলুনে নিয়ে চুল-দাড়ি কেটে দিয়েছে। নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সাড়ে তিনটার দিকে আলম নুরকে নিয়ে ছাতক থানার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে জানান ওসি।