নিজস্ব প্রতিবেদক :: শায়েস্তাবাদ খেয়াঘাটে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য, ইজারাদারে জিম্মি লক্ষাধিক মানুষ
বরিশাল সদর উপজেলার আড়িয়ালখাঁ নদীর শায়েস্তাবাদ খেয়াঘাটে ভাড়া আদায়ে নৈরাজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘাটে জনপ্রতি ১২ টাকা ভাড়া নির্ধারণ থাকলেও নেওয়া হয় ১৫ টাকা। রাত নামলে এ ভাড়া বেড়ে ৩০ থেকে ৫০-এ ঠেকে। বিকল্প উপায় না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়ায় পার হতে বাধ্য হচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিদিনই এ খেয়াঘাট দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শায়েস্তাবাদ খেয়াঘাটে জনপ্রতি ১২ টাকা, চালকসহ বাইসাইকেল ১৫ টাকা ও চালকসহ মোটরসাইকেল ২৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা রয়েছে। কিন্তু ঘাটে এ নিয়মের তোয়াক্কা না করে যাত্রী প্রতি ১৫, বাইসাইকেল ২৯ ও মোটরসাইকেল ৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। খেয়াঘাটে টোল আদায়ের চার্ট টানানোর কথা থাকলেও তা মানছেন না ইজারাদার ও মাঝিরা। বাড়তি ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করায় যাত্রীদের লাঞ্ছিতের অভিযোগও রয়েছে।
সম্প্রতি শায়েস্তাবাদ খেয়া ঘাটে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘাটে যাত্রী সাধারণ, বিভিন্ন যানবাহন ও মালামাল পারাপারে সরকার অনুমোদিত চার্ট সহজে দর্শনীয় জায়গায় নোটিশ বোর্ড আকারে টানানোর বিধান থাকলেও দুই পারের কোথাও চার্ট টানানো হয়নি। ফলে ইজারাদাররা ইচ্ছা মতো ভাড়া আদায় করছে। যাত্রীরা নিরূপায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই পারাপার হচ্ছে। এখানকার কয়েক লাখ মানুষের ভোগান্তি নিরসনে আড়িয়ালখা নদীর উপর অচিরেই একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা।
এলাকার বাসিন্দা কবির গাজি বলেন, এ খেয়া ঘাটে জুলুম চলছে। ইজারাদারদের এই জুলুম দেখার কেউ নেই। ইজারাদাররা ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছে। কেউ প্রতিবাদ করলে ইজারাদার বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়।
কলেজ শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। সবাইকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে পারাপার হতে হয়। এখানে অচিরেই একটি সেতু নির্মাণ জরুরি। একটি সেতু হলেই দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।
ভাড়া চার্ট না টানানোসহ অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি শিকার করে ইজারাদার মো. সুমন রাজ বলেন, মাঝে মাঝে যখন কোনো লোক থাকে না তখন অল্প লোক নিয়ে ট্রলার ছাড়লে কিছু টাকা বেশি চেয়ে নেওয়া হয়। এখানে দোষের তো কিছু নেই। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে সরকার নির্ধারিত ভাড়া চার্ট শিগগিরই টানানো হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, শায়েস্তাবাদ খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সেতু নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।