খান আব্বাস :: নানান সমস্যায় জর্জরিত দক্ষিণ বাংলার একমাত্র চিকিৎসা সেবা বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক বিভাগ। শয্যা সংখ্যার তিন গুণ বেশি, দালালদের দৌরাত্ম্যে, জনবল সংকট, সৌন্দর্য বর্ধনে অবহেলা, নোংরা পরিবেশে বেহাল অবস্থা থাকলেও নজরদারি নাই কর্তৃপক্ষের। ফলে রোগীদের নিত্যদিনের পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ।
মানসিক বিভাগে ভর্তি কম থাকলো বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা অনেক গুন।
কিন্তু ইনডোরের দালালের আনাগোনা না থাকলেও বহির্বিভাগে নামধারী লম্বা সবুজ সহ কয়েকজন দালাল পোষণ করছে কতিপয় স্টাফরা। সবুজ নামে এক দালালকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে নিজেকে স্টাফ পরিচয় দেয় এবং ওই বিভাগের কর্তব্যরত রুহুল আমিন লিখনের আস্থাভাজন বলে পরিচয় দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
কিন্তু এই বিভাগটিতে রোগীদের জন্য বেড সংখ্যা রয়েছে পুরুষ মহিলা মিলে ১২ টি,
প্রতিনিয়ত রোগী ও ভর্তি হয় ১০-১২ জন।বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা তিন গুন রয়েছে।
পর্যাপ্ত বেড সংকট থাকায় রোগীদের ফ্লোর করতে হয়।
এমন দুর্ভোগ সমস্যা মানসিক বিভাগটি চালু হওয়ার পর থেকে চলে আসছে।
রোগী ও তাদের স্বজনরা এমন অবহেলার কারণে কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন।
সূত্রে জানা যায়, যুগের পর যুগ ধরে এই মানসিক বিভাগ ওয়ার্ডটি এভাবে চলে আসলেও আজ অব্দি কোন ধরনের অগ্রগতি হয়নি।
এখানে চিকিৎসকের পদ ছয়টি থাকলেও রয়েছে চারটি। অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে।
এখানে নেই কোন জনবল। একজন মাত্র ক্লিনার দিয়ে চলছে সেবা।
শুধুমাত্র নার্সের পদ সম্পূর্ণ থাকলেও রয়েছে নানান সমস্যা।
অভিযোগ রয়েছে পুরুষ মহিলা রোগী মিলে একই টয়লেট ব্যবহার করছে। আবার তার মধ্যে নেই টয়লেটের দরজা।
এমনকি চিকিৎসকের জন্য আলাদা নেই কোন বাথরুম। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের বাথরুম নেই এমন ঘটনা নজিরবিহীন।
শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে সৌন্দর্য বর্ধন আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও একমাত্র অবহেলায় রয়েছে মানসিক বিভাগ ওয়ার্ডটি।
চিকিৎসা সেবা নিতে এসে বানাড়িপাড়ার আলমগীর হোসেনের স্বজন জানান, এখানের চিকিৎসা সেবা ভালো। প্রথমে আমরা কোন বেড পাইনি, সমস্যা রয়েছে বাথরুম ও নোংরা পরিবেশ নিয়ে। একই বাথরুমে পুরুষ মহিলা ব্যবহার করতে হয়- আবার নেই দরজা।
এত বড় হাসপাতালে এমন সমস্যা কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।
বহির্বিভাগে গৌরনদীর চিকিৎসা নিতে এসে কামাল জানান, চিকিৎসা সেবা পেয়েছি তবে প্রথমে সজীব নামে এক দালালের খপ্পরে পড়তে হয়েছে। শুরুতে আমরা কিছু বুঝিনি, তিনি আমাদেরকে স্টাফ পরিচয় দিয়ে নিয়ে আসে, আমাদের অনেক টাকা খোয়া যায়।
তবে এসব দালাল দায়িত্বরত স্টাফরা পালে, তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে আমাদেরকে সর্বশান্ত করে।
মানসিক বিভাগ ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, পরিচালকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি এসে পরিদর্শন করে গিয়েছেন।তবে আমাদের এখানে জনবল সংকট হয়েছে, চিকিৎসা সেবা রোগীরা শতভাগ পাচ্ছে। শুধু বাথরুম নিয়ে সমস্যা বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে মানসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মাহাবুব ই কিবরিয়াকে ফোন দেয়া পরে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, মানসিক ওয়ার্ডটি নিয়ে আমাদেরও চিন্তা রয়েছে। এই ওয়ার্ডটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টেন্ডার হয়েছে। খুব দ্রুত এর কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।