স্টাফ রিপোর্টার :: বরিশাল মহাবাজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাবার পথে এক স্কুল ছাত্রীকে রাস্তা সংলগ্ন বাগানে জোরপূর্বক ঢুকিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদ করায় প্রতিপক্ষ দলবল নিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে প্রতিবন্ধীসহ ৩ নারীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে।এ ঘটনায় নগরীর ৪নং ওয়ার্ড রোকেয়া আজিম সড়ক ও মহাবাজ এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। মাদক ব্যবসায়ীদের ক্ষমতার প্রভাবে স্কুল ছাত্রী ন্যায্য বিচার পাবে কিনা তা নিয়ে ওই এলাকার অধিকাংশ জনমনে প্রশ্নের দানা বেঁধে উঠেছে।
উপরোক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওই স্কুল ছাত্রী জানিয়েছেন, প্রায়ই স্কুলে আসা-যাবার পথে আশিক ঘরামী (২০) তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়ার পাশাপশি যৌন হয়রানী করে আসছে। রাজি না হওয়ায় ওই সব ঘটনা ঘটিয়েছে। তাকে ধর্ষণ চেষ্টাসহ পরিবারের উপর হামলার ঘটনার ন্যায্য বিচার চান তিনি।
স্কুল ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, প্রতিদিনের ন্যায় চলমান মাসের গত ২৪ মার্চ সকালে তার মেয়ে বাসা থেকে স্কুলে রওনা হয়। যাবার পথে রাস্তা সংলগ্ন খন্দকার বাড়ির বাগানের পাশে বসে আশিক ঘরামী দলবল নিয়ে তার মেয়েকে জোরপূর্বক জঙ্গলে নিয়ে যায়। মেয়ের ডাকচিৎকারে পথচারীরা ছুটে আসলে আশিক তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে মেয়ের মুখে সব ঘটনা শুনে ২৬ মার্চ বরিশাল কাউনিয়া থানায় গেলে থানা পুলিশ আদালতে অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেয়। ২৮ মার্চ বরিশাল আদালতে গিয়ে মামলা দায়ের করেছেন স্কুল ছাত্রীর মা।
এ খবর শুনে ২৯ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে আশিক ঘরামী, ফাহিম, অনিক, আবির ও কামাল ঘরামীসহ অজ্ঞাত আরো ক'জন মিলে ওই স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ হামলার সময় স্কুল ছাত্রীর বাবা (আমি) বাড়িতে না থাকায় তার মা, বাকপ্রতিবন্ধী চাচি ও দাদী আহত হয়েছে। প্রতিবন্ধী ইয়াসমিন পায়ে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে। ঘটনার পরই তাকে স্থানীয়রা শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত অপর দু'জন প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়েছে। হামলার ঘটনার ভিডিও রয়েছে।
চিকিৎসাধীন বাকপ্রতিবন্ধী ইয়াসমিনের হাতের ইশারার কথা দেখে তার শাশুড়ি ভানু বেগম বলেন, হামলাকারীরা হাতে রামদা, চাকুসহ লাঠি নিয়ে তাদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। এ হামলার বিচার চান তিনি।
স্থানীয় বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, হামলাকারী আশিক ঘরামী ও তার পিতা-মাতা কামাল ঘরামী ও কাজুলি বেগম মাদক ক্রয়-বিক্রয় অভিযোগসহ মামলাও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। মাদকরাজ্যে এ পরিবারের গডফাদার হলেন সবুজ খলিফা ও সরোয়ার হোসেন জীবন। দু’জনের নামেই হত্যা মামলাসহ রয়েছে মাদক মামলা। এ দু’জনের ছত্রছায়ায় রয়েছে তিন নারী মাদক ব্যবসায়ী। এরা হল আশিক ঘরামীর মা কাজুলি বেগম, মুন্নি বেগম ও ফাহিমের মা জলিল ঘরামীর স্ত্রী। তারা একটি মহিলা গ্রুপ হয়ে এলাকার ভয়ানক ব্যক্তিদের সাথে সখ্যতা রেখে অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন। অসাধু কয়েক পুলিশের সাথে তাদের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। তাই এ সব পরিবারের লোকজন এলাকায় হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও মাদক কেনাবেচা করার মত অপরাধ করতেও ভয় পায় না।
এ বিষয়ে বরিশাল নগরীর ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ শামসুদ্দোহা (আবিদ) জানান মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও সেবন নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে বলে শুনেছি। এরা মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী। কাউনিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছেন, অভিযোগ বা আদালতে মামলা দায়ের হলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।