নিজস্ব প্রতিবেদক :: দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউপির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইউপি সদস্যরা। শনিবার (৩০ মার্চ) বেলা ১১টায় বরিশাল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেদারপুর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মুসা আলী। তিনি জানান, অনাস্থা প্রস্তাব এনে সংবাদ সম্মেলনের আগে ওই অভিযোগ বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ১০ দপ্তর প্রধানের কাছে দেওয়া হয়েছে।
মুসা আলী বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারী সরকার থেকে বরাদ্দ ত্রাণের টিন, কাবিখা, কাবিটা, টিআর, গ্রামীণ অবকাঠামোর চাল, গম ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিডি চাল আত্মসাৎ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ সংস্কারের ১০ লাখ টাকা কোনো কাজ না করেই আত্মসাৎ করেছেন।
কার্ডধারী ৫১২ জন জেলের জন্য ৪০ কেজি করে বরাদ্দকৃত চাল কালোবাজারে বিক্রি করেছেন। প্রত্যেক গভীর নলকূপের জন্য ৩৫ হাজার টাকা করে ২০২১ সালে ১৩টি, ২২ সালে ১৪টি ও ২৩ সালে ১৩টির টাকা আত্মসাৎ করেছেন। খাসজমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল করে সেখানে চারতলা ভবন করেছেন। ওই ভবনে একটি গোপন কক্ষ রয়েছে। সেই কক্ষে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ ও ইউপি সদস্যদের ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, গরিব মানুষের জমি দখল করে অবৈধ ইটভাটা ও জাহাজ নির্মাণের ডক ইয়ার্ড করা হয়েছে, যার পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন নেই। মানুষের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে ইট তৈরি করা হয়। নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয়। জাল দলিল দিয়ে বিভিন্ন নামে বেনামে কৃষিঋণ উত্তোলন করা হচ্ছে। টেম্পুচালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারী ঈগল পরিবহনের সুপারভাইজার ছিলেন।
বিভিন্ন পরিবহনে ডাকাতির অভিযোগ করে ইউপি সদস্য মুসা আলী বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। চেক জালিয়াতির মামলায় এক বছর কারাদণ্ড ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৫ টাকা জরিমানা করা হয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারীর বিরুদ্ধে।
ভিজিডি ও জেলেদের চাল পাচারের সময় ৫ হাজার ১৫২ বস্তা চাল উদ্ধারের ঘটনায় র্যাবের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলারও আসামী ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারী। ইউপি সদস্য মুসা আরও জানান, সংবাদ সম্মেলনে তারা সাধারণ ৭ ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সংরক্ষিত সদস্য তিনজনের দুজন তাদের সঙ্গে রয়েছেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে আসেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারীর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়ায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ডেকেছি। তাদের নিয়ে সভা করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। যদি না হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।