নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরগুনায় নির্মাণের সাত দিনের মধ্যে ধসে পড়ল মাদ্রাসা ভবনের সিঁড়ি
বরগুনার বেতাগী উপজেলায় একটি নির্মাণাধীন মাদ্রাসা ভবনের সিঁড়ি নির্মাণের সাত দিনের মাথায় গতকাল সোমবার রাতে ধসে পড়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢালাই কাজের ২১–২৮ দিন পর সাটারিং খোলার নিয়ম থাকলেও শ্রমিকেরা তা মানেনি। এ কারণে সিঁড়ি ধসে পড়েছে।
ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম বেতাগী সালেহীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা। এটি বেতাগী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। কয়েক দিন আগে মাদ্রাসাটির একতলা ভবনের ছাদের সঙ্গে দোতলার ছাদে ওঠার সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়। বেতাগী সালেহীয়া সিনিয়র মাদ্রাসার চারতলা ভবন নির্মাণের জন্য পটুয়াখালীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাজমুন সাদাত ট্রেডার্স কার্যাদেশ পায়। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এর নির্মাণকাজ গত মে মাসে শুরু হয়।
তবে শুরু থেকেই নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় লোকজন এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারের কাছে বারবার অভিযোগ করলেও তাঁরা কর্ণপাত করেননি। সর্বশেষ গতকাল সোমবার রাতে মাদ্রাসার দোতলায় ওঠার সিঁড়ি ধসে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার কারায় সিঁড়িটি নির্মাণের সাত দিন না যেতেই ভেঙে পড়েছে। এতে ওই ভবনের নির্মাণকাজের মান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় পুরো ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুব মিয়া বলেন, ভবনটি নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদার নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে আসছেন। ঢালাইতেও টেম্পারবিহীন সিমেন্ট ও কম রড দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় মিক্সচার মেশিনও ছিল না। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
তবে ভবন নির্মাণকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো. তুষার বলেন, ভবনের ত্রুটিপূর্ণ নকশার কারণে সিঁড়ি ধসে পড়েছে। নকশার মধ্যে সিঁড়ির নিচের স্তরে গোড়ায় দুটি পিলার থাকলে এ দুর্ঘটনা হতো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্মাণশ্রমিক বলেন, ‘ঠিকাদারের কথামতো গতকাল সোমবার সকালে আমরা সাটারিং খুলে ফেলি। তখন কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু ওই দিন রাতে হঠাৎ সিঁড়িটি ধসে পড়ে। আজ মঙ্গলবার ধসে পড়া সিঁড়ি ভেঙে ফেলে নতুনভাবে নির্মাণকাজ শুরু করেছি।’এ বিষয়ে বরগুনার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ঢালাইকাজের ২১ থেকে ২৮ দিন পর সাটারিং খোলার নিয়ম। তবে শ্রমিকেরা এক সপ্তাহের মাথায় সাটারিং খোলার কারণে সিঁড়ি ধসে পড়ে। ঢালাইয়ের কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে বিষয়টি এমন নয়। দ্রুতই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।