ঢাকামঙ্গলবার , ২৫ মার্চ ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালে সেনা সদস্যকে অপ*হরণ : বিএনপি নেতাদের বি*রু*দ্ধে মা*মলা গ্রেফতার, ৩

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
মার্চ ২৫, ২০২৫ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

রবিউল ইসলাম রবি :: বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বালুমহাল ইজারা দরপত্র জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে সেনা সদস্যকে অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে বিএনপি ও তার অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় চাঁদপুরের মতলব থানার বাসিন্দা আব্দুল মতিন কাজী বাদী ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং ৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত মামলার তিন আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক মোঃ নুরুল আমিন গ্রেফতারকৃত তিন আসামিকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরা হলেন- বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নূর হোসেন সুজন (৩৫), হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ইমরান খন্দকার (৩৫) এবং হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট দেওয়ান মো. মনির হোসেন (৪২)।

 

দায়েরকৃত মামলার পলাতক আসামিরা হলেন- বরিশাল জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক প্রকৌশলী মাহফুজুল আলম মিঠু, বরিশাল জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাকসুদুর রহমান ওরফে মাসুদ রাঢ়ি, কাশিপুরের রুবেল, মহানগর যুবদল নেতা ও হোটেল রিচমার্ট রেস্ট হাউজের মালিকানা অংশীদার বেলায়েত হোসেন ওরফে বেলায়েত, গণ পাড়ার মো. জাহিদ, মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদা বেগম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নিজামুর রহমান নিজাম।

কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নগরীর লঞ্চঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিসি ভবনে রিচমার্ট হোটেল থেকে আটক ৩ জনকে মঙ্গলবার থানায় হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার বাদী মতিন কাজীর ব্যাবসায়িক অংশীদার ও মামলার ২ নম্বর সাক্ষী আব্দুল বাসেত জানান, বালুমহাল ইজারা ইজারা নিতে সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে দরপত্র জমা দিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় যান তারা। এতে বাধা দেন আসামিরা। জোর করে দরপত্র জমা দিলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায় আসামিরা মতিনের ভাতিজা সেনা সদস্য জাফরকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে অপহরণ করে লঞ্চঘাট এলাকায় রিচমার্ট হোটেলের ৩১০ নম্বর কক্ষে আটকে রাখে। সেখানে তিনি নিজেকে সেনাবাহিনীর ল্যান্স কর্পোরাল পরিচয় দেয়ার পরও তাকে মারধর করে সঙ্গে থাকা স্বর্ণালংকার, আইফোন এবং নগদ টাকা রেখে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানোর পর সেনাবাহিনী রিচমার্ট হোটেলে অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যার পর সেনাবাহিনী রিচমার্ট হোটেলে অভিযান চালিয়ে দেওয়ান মনির হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি নুর হোসেন সুজন ও হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ইমরান খন্দকারকে আটক করেছে। হোটেলে আরও অনেকে থাকলেও তারা নানা কৌশলে পালিয়ে যান।

হোটেলটির অন্যতম মালিক যুবদল নেতা বেলায়েত হোসেন। দরপত্রে অংশ নিতে শিডিউল ক্রেতা অনেককে বিভিন্ন কৌশলে ডেকে এনে সোমবার এ হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিলো। হোটেল রিসমার্টে আগেও এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে দাবি স্থানীয়দের।
মামলার সাক্ষী বাসেত আরও জানান, ১৩ কোটি টাকার সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে মেঘনার বালুমহাল তারা ইজারা পেয়েছেন। তবে মামলার অন্যতম আসামি মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক ফরিদা বেগম জানান, মেঘনার বালুমহালের বিপরীতে ৩৩টি দরপত্র বিক্রি হয়েছিলো। বাসেত ও মতিনের ভাড়াটিয়া গুণ্ডাদের বাঁধায় অন্যরা জমা দিতে পারেননি। মতিনরা দুটি দরপত্র জমা দিয়ে ওই বালুমহাল বাগিয়েছে।

ফরিদা অভিযোগ করেন, সোমবার প্রত্যুষে একদল যুবক তাদের চাঁদমারি বাসায় হানা দিয়ে তার দরপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। দরপত্র ক্রয়কারী মফিজুল ইসলাম নামক আরেকজন অভিযোগ করেন, তিনি সাড়ে ৩ কোটি টাকার পে-অর্ডার কেটেও দরপত্র জমা দিতে পারেননি। মেঘনার বালুমহাল পুনঃদরপত্রের জন্য আবেদন করবেন তিনি।