
আরিফ আহমেদ :: “নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান” – শ্লোগান নিয়ে চলছে বিশাল শোভাযাত্রা আয়োজনের প্রস্তুতি। আজ বাংলা শুভ নববর্ষ। পালকী, চাষী, জেলেহ গ্রাম্য জনজীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণ হবে এবারের শোভাযাত্রার প্রধান প্রদর্শনী। আনন্দ শোভাযাত্রা নাকি মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম হবে তা নিয়ে যদিও এখন পর্যন্ত সংশয় রয়েছে। তবে শোভাযাত্রা বা বৈশাখী র্যালি হবে এটা নিশ্চিত করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সকাল ৯টায় বরিশাল সার্কিট হাউজ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশালের সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নগরজুড়ে তাই চলছে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। হচ্ছে ছোটখাটো সংস্কার। ঝেড়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, অশ্বিনী কুমার টাউনহল, বেলসপার্ক, সার্কিট হাউজ আঙ্গিনা। বরিশাল জিলা স্কুলের মসজিদ সংলগ্ন চত্বরে বরিশাল পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান প্যারিলাল রায় এর গাড়িটিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। চত্বরের চারপাশে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সংস্কার কাজ পরিচালনা করেছেন বিসিসির প্রশাসক রায়হান কাওছার।
এদিকে বরিশালের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোসহ আপামর সাধারণ মানুষের জন্য বৈশাখ উদযাপনের জন্য সকাল সাতটা থেকেই উম্মুক্ত থাকবে সার্কিট হাউজের প্রবেশপথ। এখান থেকেই বৈশাখী শোভাযাত্রা বের হবে সকাল ৯টায়। বরিশালের জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন জানিয়ে দিয়েছেন-নগরীতে পৃথক কোনো শোভাযাত্রা হবেনা, একটাই শোভাযাত্রা হবে এবং বরিশালের ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা থাকবে এই শোভাযাত্রায়। তবে সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো যার যার মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। যদিও এই আদেশ অমান্য করে বরিশাল চারুকলার নেতৃবৃন্দ পৃথক আনন্দ শোভাযাত্রা করার জন্য নিমন্ত্রণ পত্র ও প্রেসরিলিজ বিলি করছেন। তাদের এই পৃথক হওয়ার চেষ্টাকে পরিষ্কার রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলছেন বরিশালের জাসাস নেতৃবৃন্দ এবং বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবী জেলা প্রশাসক যেখানে একটাই শোভাযাত্রার কথা বলেছেন, সেখানে তাদের এই আচরণের নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা চাই তারাও আমাদের সাথে সম্পৃক্ত হবেন।
এদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সার্কিট হাউজ আঙ্গিনায় পৃথক পৃথক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক জোট ও বরিশাল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এই আয়োজনে অংশ নেবে বলে জানা গেছে। আবার অমৃত লাল দে কলেজ, বিএম স্কুল মাঠ, জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনেও পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য পৃথক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন করা হয়েছে। জাসাস, হেরারশ্মি, বরিশাল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এর উদ্যোগে রয়েছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন। অন্যদিকে বরিশাল প্লানেট শিশু পার্কে সকাল সাতটা থেকেই বৈশাখী উৎসব উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বরিশাল বিভাগীয় প্রাত:ভ্রমণ ও শরীরচর্চা পরিষদ।
বেলস পার্ক সাজানো হয়েছে প্রায় অর্ধশত স্টল নিয়ে। লোকজ উৎসব ও লোকজ পণ্যের মেলা হবে বরিশাল বিসিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর যৌথ আয়োজনে। এরসাথে সম্পৃক্ত থাকবেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও।
সবমিলিয়ে গতানুগতিক বৈশাখী উৎসব উদযাপনের বাইরে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা এবারের বৈশাখী উৎসবে। নামকরণে বৈশাখী শোভাযাত্রা হবার সম্ভাবনা রয়েছে।